বন্দরে টিসিবির পন্য আত্মসাতের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় নারী কাউন্সিলর সানিয়া সাউদকে প্রকাশ্য মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সামছুজ্জোহা বিরুদ্ধে । এতে বাধা দিতে গিয়ে কাউন্সিলর সচিব নাঈম গুরুত্বর আহত হয়।
এ ঘটনায় নির্যাতিত সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর সানিয়া সাউদ বাদী হয়ে মঙ্গলবার ( ৫ মার্চ) রাতে কাউন্সিলর সামছুজ্জোহা ও তার ভাই জাহাঙ্গীরসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি । এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে বন্দর থানার ২৬ নং ওয়ার্ডের ঢাকেশ্বরী বাজারে এ ঘটনাটি ঘটে।
নির্যাতিত মহিলা কাউন্সিলার সানিয়া সাউদ বন্দর থানার দক্ষিণ লক্ষনখোলা এলাকার আনিসুর রহমান টিটু মিয়ার স্ত্রী। অভিযুক্ত কাউন্সিলর শামসুজ্জোহা বন্দর থানার রামনগর এলাকার মৃত সিদ্দিক মাস্টারের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বন্দর থানার ঢাকেশ্বরী এলাকায় প্রায় ১ হাজার ৯ পরিবারের জন্য টিসিবি আসে। পরে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর সানিয়া সাউদ খবর পেয়ে বিতরণ স্থলে আসে।
পরে সে টিসিবি মালামাল বুঝে নেওয়ার সময় ২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুজ্জোহা ও তার ভাই জাহাঙ্গীর একই এলাকার অটো রিপন সহ অজ্ঞাতনামা ১০-/১৫ জন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এক পর্যায়ে বাধা প্রদান করে।
এই ঘটনায় সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলার এর প্রতিবাদ করলে ওই সময় কাউন্সিলর শামসুজ্জোহাসহ উল্লেখিতরা প্রকাশ্যে মহিলা কাউন্সিলর কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ চড় থাপ্পড় মেরে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। ওই সময় তার সচিব নাঈম তাদেরকে বাধা প্রদান করলে উল্লেখিতরা তাকেও বেদম ভাবে পিটিয়ে নীলা ফুলা জখম করে।
পুরুষ কাউন্সিলর কর্তৃক সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর নির্যাতিত ঘটনায় উক্ত এলাকার চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে সানিয়া সাউদ আরো বলেন, আমাকে জনগন ভোট দিয়ে দায়িত্ব দিয়েছে। জনগণের মাল আত্মসাৎ করার জন্য ভোট দেয়নি। টিসিবি'র পন্য বিতরণে প্রতিবারই সামছুজ্জোহা ডিলারের সাথে যোগসাজশে জনগণের হক আত্মসাৎ করে।
সে কারনে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পূর্বে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি চাল, ডাল, তেল ও ছোলা অন্যথ সরিয়ে রেখেছে। ১ হাজার ৯ শত কার্ডধারী লোককে এগুলো দেয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশই সরিয়ে রেখেছে।
এতে প্রতিবাদ করতে গেলেই সামছুজ্জোহা দুই দফা হাত তুলেন মহিলা কাউন্সিলর সানিয়া সাউদের উপর। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ ৬/৮ টি চর থাপ্পড় দিয়েছে বলেও জানান।
তিনি আরো বলেন, ৩ টি ওর্য়াডের জনগন আমার দিকে/ সরকারের টিসিবি'র পণ্যের দিকে তাকিয়ে থাকে। সরকারের ভূর্তিকীকৃত টিসিবি'র পণ্য জনগনের কাছে( কার্ডধারীদের) হাতে তুলে দেয়ার দায়িত্ব আমাদের। সেখানে প্রতিবারই সামছুজ্জোহা ডিলারের সাথে যোগসাজশে জনগণের হক আত্মসাৎ করে। যার অহরহ অভিযোগ রয়েছে।
এতো অভিযোগ ও জনগণের হক আত্মসাৎ রোধে সন্ধ্যার পূর্বে ঘটনাস্থলে গেলেই সামছুজ্জোহার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পরে। আমি পন্যগুলো বুঝে নোয়ার কথা বলতেই উত্তেজিত হয়ে উঠে। এবং বলে তুই এখানে কি? তোর কাছে আমার হিসাব দিতে হবে। তোর মেয়রকে আমার বিষয়ে বলে পারলে কিছু করিছ বলে কার্ডধারীদের পণ্য না দিয়ে গাড়ী সরিয়ে নিয়ে যায়।
কাউন্সিলর সামছুজ্জোহার এমন ঘটনাকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখছেন সচেতন মহল। একজন মহিলা কাউন্সিলরের উপর হাত তুলতে সাহস পায় কিভাবে এমনই প্রশ্ন সচেতন মহলের। ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসক, নাসিক মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভীর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কাউন্সিলর সামছুজ্জোহাকে তার মোবাইল নাম্বারে একাধিক বার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।