নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

রোববার,

২৪ নভেম্বর ২০২৪

সোনারগাঁয়ে ১০০ কেজি গাঁজাসহ গ্রেপ্তার ২

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:১৭:১৩, ২৩ জানুয়ারি ২০২৪

সোনারগাঁয়ে ১০০ কেজি গাঁজাসহ গ্রেপ্তার ২

অভিনব কায়দায় মাদক সরবারহকালে ১০০ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৩। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-  কুমিল্লা জেলার চান্দিনা থানার কাশিমপুর গ্রামের আব্দুর রবের ছেলে মো. মহসিন (৪০) ও তার সহযোগী একই এলাকার চন্দন চন্দ্র সরকারের ছেলে পিন্টু চন্দ্র সরকার (২৪)। এ সময় মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি পিকআপ জব্দ করা হয়। 

মঙ্গলবার দুুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে র‌্যাব-৩’র সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আরিফুর রহমান (পিপিএম) জানান, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। গ্রেপ্তারকৃত মহসিন ও পিন্টু পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী।

কয়েক বছর যাবৎ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে রাজধানী ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাসমূহে মাদকের বড় বড় চালান নিয়ে এসে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রয় করত।

সোমবার রাতে গ্রেপ্তারকৃতরা অভিনব কায়দায় একটি পিকআপে করে পানির ট্যাংকিতে অভিনব কায়দায় লুকিয়ে মাদক পরিবহনের সময় সোনারগাঁয়ের মেঘনা নিউটাউন এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপর একটি অস্থায়ী চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে ওই গাঁজাসহ তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত পিকআপটিও জব্দ করা হয়। 

এ মাদক সিন্ডিকেটের মূলহোতা হলো মহসিন এবং তার অন্যতম সহযোগী পিন্টু। তাদের সাথে কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকার আরও কয়েকজন মাদক কারবারী এই অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। তারা অল্প পরিশ্রমে অধিক অর্থ উপার্জনের লোভে মহসিনের পরিকল্পনা মোতাবেক মাদক সিন্ডিকেটটি গড়ে তোলে।

মূলত ধৃত মহসিনের পরিকল্পনায় তার অপরাপর সহযোগীরা বিভিন্ন সময় অবৈধ মাদকের চালান বহন ও বিক্রয়ের কাজ করে আসছে। উক্ত চক্রটি মাদকদ্রব্য চোরাচালানের ক্ষেত্রে একেক সময় একেক ধরনের পন্থা অবলম্বন করত।

তারা কখনও ভূয়া নাম পরিচয় ব্যবহার করে, কখনও মাইক্রোবাস/প্রাইভেট কারে যাত্রী পরিবহনের নামে কিংবা যাত্রীবাহী বাসযোগে এবং  পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যানে করে অবৈধ মাদকদ্রব্যের বড় চালান নিয়ে আসত। পরবর্তীতে সেসব মাদকদ্রব্য তাদের সহযোগী অন্যান্য মাদক কারবারীদের মাধ্যমে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ ও বিক্রয় করত।

মহসিনের বিরুদ্ধে মাদক মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সে গত বছরের ৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগরীর হাতিরঝিল থানা এলাকা থেকে মাদকসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে চাঁদপুর মডেল থানায় আরেকটি মাদক মামলা রয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ৩ মাস কারাবরণ শেষে জামিনে বের হয়ে পুনঃরায় সে অবৈধ মাদকদ্রব্যের চোরাচালানের সাথে যুক্ত হয়।

র‌্যাব সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারকৃত মহসিন পারিবারিক টানাপোড়েন এর কারণে পড়াশোনা না করে ছোটবেলা থেকে নিজ এলাকায় নছিমন গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। পরবর্তীতে সে পিকআপের হেলপারি শুরু করে। দীর্ঘ ৪ বছর পিকআপের হেলপারি করার পর সে নিজেই পিকআপ চালানো শুরু করে।

এরপর থেকে সে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে পিকআপযোগে পণ্য পরিবহন করতো। উক্ত পেশার আড়ালে অধিক অর্থ উপার্জনের লোভে সে মাদক কারবারের সাথে জড়িয়ে পড়ে। সে বিভিন্ন কৌশলে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অবৈধ মাদকদ্রব্য এনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদক সিন্ডিকেট তৈরি করে। 

উক্ত সিন্ডিকেটটি দীর্ঘদিন যাবৎ রাজধানী ঢাকায় এবং এর আশেপাশের এলাকায় মাদকের বড় বড় চালান আনা নেয়া এবং ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে জমজমাটভাবে মাদকদ্রব্যের কারবার চালিয়ে আসছিল।

অন্যদিকে, গ্রেপ্তারকৃত পিন্টুর পেশা মূলত কাঠমিস্ত্রি। মাদক কারবারী মহসিন এবং পিন্টুর বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় মাদক সেবনের মাধ্যমে তাদের মাঝে সখ্যতা গড়ে উঠে। পরবর্তীতে মহসিন অল্প পরিশ্রমে অধিক অর্থের লোভ দেখিয়ে পিন্টুকে তার মাদক ব্যবসার সহযোগী হতে প্ররোচিত করে। এরপর হতে পিন্টু তার দৃশ্যমান কাজের পাশাপাশি গোপনে মহসিনের সাথে মাদকদ্রব্য পরিবহন ও ক্রয়-বিক্রয়ে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করে আসছে।