নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, পানিটা সাদা হলে ব্যাপার ছিল না। এটা পানি না. এটা হচ্ছে একটা বিষাক্ত পদার্থ। এই পানির সাথে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ময়লা থেকে আরম্ভ করে এমন কোন বিষ প্রক্রিয়া নাই এই পানির সাথে না আছে। আমার এলাকার ৩০ থেকে ৪০ লাখ লোক এই পানির ভিতরে থাকে এবং তারা পানি বন্দি অবস্থায় আছেন।
তারা আমার কাছে আশা করে যেহেতু ডিএনডি প্রজেক্ট নেওয়া হয়েছে। জাতির পিতার কন্যার প্রতি তাদের বিশ্বাস আছে। আমাদের প্রতিও কিছুটা আছে। কিছু কিছু কালভার্ট দেরিতে নির্মাণ হচ্ছে সেখানে পানি আটকে রাখা হয়েছে হয়তো। এটা পানি আটকে থাকার একটা বড় কারণ।
এই পানি যদি কমপ্লিটলি অপসারণ না করা যায় এবং করা না হয় তাহলে আমার একটাই পথ থাকবে আমি তো আর কোন প্রতিবাদ করতে পারবোনা। আমি এলাকার মানুষকে সাথে নিয়ে ওই ময়লা পানির বর্জ্যের মধ্যে নেমে অবস্থান ধর্মঘট করবো যতক্ষণ পর্যন্ত এটা সমস্যার সমাধান না হবে। সেনাবাহিনীর ভাইরাও তখন আমাকে ময়লা পানি থেকে উঠাতে পারবে না। আমি যেটা বলি সেটা কিন্তু করি। আমি যেটা বলবো আমি সেটা করবো।
আজ রোববার (২ জুলাই) সিদ্ধিরগঞ্জে ডিএনডি এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এরআগে তিনি স্থানীয় লোকজন, জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেন, জলাবদ্ধতায় তাদের দু:খ দুর্দশার কথা শুনেন ও দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন।
এ সময় শামীম ওসমান আরও বলেন, ঈদের সময় আমি অসুস্থ থাকায় সেখানে যেতে পারিনি। আমার ছেলেকে (অয়ন ওসমান) পাঠিয়েছি। সে তার টিম নিয়ে এলাকাগুলোতে গিয়েছে। ও এসে আমাকে ছবি দেখিয়ে বললো মানুষের যা অবস্থা সেখানে জীবন যাপন করা সম্ভব না। সেখানে মানুষকে কোরবানি করতে হচ্ছে। আমি কষ্টে ঈদের দিন সারাদিন বের হইনি। কারও সাথে কথাও বলিনি।
তিনি বলেন, গতকাল রাতে পানিসম্পদ মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে আমার কথা হয়েছে তিনি আমাকে কথা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন কয়েকটা দিন সময় দিতে তাকে। না হলে আমি নিজে (শামীম ওসমান) যে যে এলাকায় পানি থাকবে সেখানে ময়লা পানিতে নেমে প্রতিবাদ জানাতাম। যা হবার হবে। পানিতে নেমে বলতে পারতাম এই এলাকার মানুষের কাছে যে ভাই আপনিও পানিতে আছেন আমিও পানিতে আছি।
মন্ত্রী মহোদয় অত্যন্ত ভালো মানুষ। চেষ্টাও করেন। পরিষ্কার কথা আমার এলাকার মানুষ পানিতে কষ্ট করবে। আজকে আমি এমপি, কে বানিয়েছে আমাকে এমপি। এই এলাকার মানুষগুলি আমাকে এমপি বানিয়েছে। শুধু আমাকে এমপি বানায় নাই ভিআইপিও বানিয়েছে এবং মাস শেষে বেতন দেয়। আমরা মাস শেষে বেতন পাই। কিন্তু মাস শেষে বেতন পাওয়ার পরও যদি জনগণের পারপাস সাপ করতে না পারি তাহলে আমার মনে হয় এই পদে থাকার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
শামীম ওসমান বলেন, আমার পানির কানেকশনটা তো ড্রেনের সাথে থাকতে হবে। সিদ্ধিরগঞ্জ পুরোটাই তো সিটি করপোরেশনের আওতায় পড়েছে। সিটি করপোরেশনের কাছে অনুরোধ যেন অতিশিঘ্রই সিদ্ধিরগঞ্জের ড্রেনের ব্যবস্থা ঠিক করে। পানিটা যেন ডিএনডি খালে সরাসরি যায়।
তিনি বলেন, আজ রাতের মধ্যে জমে থাকা পানি নামনো হবে। কালকে আর পানি থাকবে না। এবং আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হয়ে যাবে। আমার প্রত্যাশা আছে। ডিএনডি প্রজেক্টের জন্য ১২শ ৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। মূলত করোনা ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এই টাকাটা আসতে দেরি হয়ে গেছে। তবে এই জুলাই মাসেই টাকাটা আসবে। যেহেতু সেনাবাহিনী কাজটি করবে আমার প্রত্যাশা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজটি তারা শেষ করতে পারবে। তাদের ওপর আমাদের আস্থা রয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শামীম ওসমান বলেন, ইতিপূর্বে ডিএনডি প্রোজেক্টের জন্যে ১২শ ৯৯ কোটি টাকা বাজেট আনা হয়েছে। সামনে আবারও কি ডিএনডি প্রোজেক্টের কাজের জন্য টাকা বাড়ানো হবে নাকি (প্রশ্ন সাংবাদিক) ? জাবাবে শামীম ওসমান বলেছেন আর কোনো বাজেট বাড়ানো হবে না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়া, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক নাসিক ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজি নুরুদ্দিন মিয়া, ১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইফতেখার আলম খোকন, ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা, ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী আনোয়ার ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক ভূঁইয়া রাজু, সিদ্ধিরগঞ্জ আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিকলীগের আহ্বায়ক আব্দুস সামাদ বেপারী, আওয়ামীলীগ নেতা মাহবুব হোসেন, সরকারী তোলারাম কলেজের ভিপি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, ডিএনডি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকসহ পানি সম্পদ মন্ত্রানলয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।