নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় জালিয়াতি করে ভূয়া দলীল সৃজনের মাধ্যমে মায়ের জমি আত্মসাতের দায়ে দুই ছেলে, দলিল লিখক ও সাক্ষীসহ ৬ জনকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ বদিউজ্জামান এই রায় ঘোষনা করেন। রায় ঘোষনার সময় আদালতে আসামিরা অনুপস্থিত ছিলেন।
দন্ডপ্রাপ্ত দুই ছেলে হলেন- মো. কামরুল আহসান ও মো. একরামুল আহসান। অন্য আসামিরা হলেন- দলিল লেখক মো. ইউনুছ মিয়া, দলিলের স্বাক্ষী মীর্জা ইমতিয়াজুল, আরেক স্বাক্ষী মো. বশির উদ্দিন ও দলিলের সনাক্তকারী মো. শাহাদাত হোসেন।
এর আগে ২০০৯ সালের ২২ নভেম্বর মা মোসা. কমরের নেহার স্বাক্ষর জাল করে অন্য মহিলাকে দাতা সাজিয়ে তার দুই ছেলে কামরুল আহসান ও একরামুল আহসান নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার পিলকুনি মৌজায় ১২৭ শতাংশ জায়গা রেজিস্ট্রি করে নেয়। ঘটনা জানাজানি হলে ২০১০ সালের ৪ মার্চ তার দুই ছেলে, দলিল লিখক, দলিলের স্বাক্ষী সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ুন কবির সোহেল বলেন, ২০১০ সালে একটি সিআর মামলা দায়ের করেছিলাম। যে মামলার বাদী ছিলেন কমরের নেহার।
তিনি অভিযোগ করেছিলেন তার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তার দুই ছেলে ১২৭ শতাংশ সম্পত্তি নিজেদের নামে দলিল করে নিয়েছেন। আর তাদেরকে সহযোগিতা করেছেন দলিল লেখক ও দলীলের স্বাক্ষীরা। প্রকৃতপক্ষ কখনই তাদের মা দলিলে স্বাক্ষর করেনি।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন এই মামলাটির বিচার কাজ পরিচালনা শেষে সাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত রায় ঘোষণা করেছেন। আসামিরা মামলাটির বিচারকাজ দীর্ঘ করার জন্য অনেক চেষ্টা চালিয়েছে।
অবশেষে তারা বুঝতে পেরেছে তাদের সাজা ভোগ করতে হবে তাই আদালতে আসেনি। আদালত তাদের অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেছেন। আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট।
মামলার বাদী কমরের নেহার বলেন, আমার দুই ছেলে দুষ্ট প্রকৃতির অতিলোভী। তারা আমার পরিবারের অন্য সদস্যদের অধিকার নষ্ট করে নিজেদের নামে সম্পত্তি দখলে নেয়ার জন্য আমার স্বাক্ষর জাল করেছে। তারা আমার কথা শুনে নাই। পরে আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি। আদালত রায় ঘোষণা করেছেন। আমরা আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট।
জানা গেছে, ২২ নভেম্বর ২০০৯ সালে মা মোসা. কমরের নেহার স্বাক্ষর জাল করে, অন্য মহিলাকে দাতা সাজিয়ে তার দুই ছেলে কামরুল আহসান ও একরামুল আহসান নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার পিলকুনি মৌজায় ১২৭ শতাংশ জায়গা রেজিস্ট্রি করে নেয়।
ঘটনা জানাজানি হলে ২০১০ সালের ৪ মার্চ তার দুই ছেলে, দলিল লিখক, দলিলের সাক্ষিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ যুক্তি তর্ক শেষে আজ বিকেলে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ বদিউজ্জামান উপরোক্ত রায় প্রদান করেন।