নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় ত্রাস সৃষ্টিকারী কিশোর গ্যাং এর প্রধান রাইসুল ইসলাম সীমান্তসহ “টেনশন গ্রুপের” গ্রেপ্তারকৃত ৭ জনকে এক দিনের রিমান্ডে নিয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ।
রোববার (১৪ আগষ্ট) দুপুরে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় আনা হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো: হাফিজুর রহমান মানিক।
এর আগে গত শনিবার (৬ আগষ্ট) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ২ নম্বর ওয়ার্ডের মিজমিজি পশ্চিম পাড়া এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে দেশীয় অস্ত্রসহ তাদেরকে গ্রেফতার করে র্যাব-১১ এর একটি দল। এসময় তাদের তল্লাশি করে ১ টি গুপ্ত ছোরা, ২ টি গিয়ার সুইচযুক্ত ধারালো চাকু, ২ টি ছোরা এবং ২ টি লোহা ও ষ্টিলের পাইপ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান নারায়ণগঞ্জ মহানগর সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শফিকের ছেলে মো. রাইসুল ইসলাম সিমান্ত (গ্যাং প্রধান), নজরুল মিয়ার ছেলে মো. নাঈম মিয়া, আল আমিনের ছেলে মো. হাসান, মো. ইসলামের ছেলে মো. পারভেজ মিয়া, আব্দুল হাকিমের ছেলে আবির বিন হাকিম, আমান উল্লাহের ছেলে মো. রাহাত, নুরুল ইসলামের ছেলে মো. রিয়াদুল ইসলাম।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় তারা সবাই দুষ্কৃতিকারী ও কিশোর গ্যাং এর সক্রিয় সদস্য। আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে তাদের প্রতিপক্ষ কিশোর গ্যাং এর সদস্যদের ঘায়েল করার জন্য শক্তির মহড়া ও দাপট প্রদর্শন করে ঘটনাস্থলে গুপ্ত ছোড়া, লোহার ও ষ্টিলের পাইপ, ছোরা, সুইচগিয়ার চাকুসহ একত্রিত হয়েছিল।
তারা দীর্ঘদিন যাবৎ রাস্তা ঘাটে পরিকল্পিতভাবে দলবদ্ধ হয়ে সংঘাত সৃষ্টি ও জনমনে অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিল। তারা ৭ থেকে ১০ জনের একটি গ্রুপ সংঘবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন সময় সিদ্ধিরগঞ্জ ও এর আশপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভয়ভীতি বা ত্রাস সৃষ্টি করে বিশৃঙ্খলা বা অরাজকতা সৃষ্টি করে আসছিল।
এদিকে শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিকেলে কিশোর গ্যাং ‘টেনশন গ্রুপের’ একটি অস্ত্র চালানোসহ তাদের কর্মকাণ্ডের কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওগুলো দ্রুতই ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ফের আবারও সিদ্ধিরগঞ্জসহ দেশ ব্যাপী আলোচনায় আসে ‘টেনশন গ্রুপ’।
ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, টেনশন গ্রুপের প্রধান রাইসুল ইসলাম সীমান্ত পিস্তল ও গুলি নিয়ে গানের সঙ্গে নাচানাচি করছেন। আরেকটি ভিডিওতে অস্ত্রসহ এক যুবককে নির্যাতন করতেও দেখা গেছে।
তবে র্যাবের দাবী গ্রেফতারের সময় তাদের তল্লাশী করে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হলেও ওই সময় তাদের কাছ থেকে কোন পিস্তল পাওয়া যায়নি।
ভিডিওগুলো ভাইরাল হওয়ার পর এসব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকাবাসী। তা নাহলে জামিনে বেরিয়ে এসে এসব অস্ত্র দিয়ে আবারও এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান মানিক জানান, ‘টেনশন গ্রুপের’ অস্ত্র চালানোর ভিডিও পেয়েছি। এই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।