নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শনিবার,

২৩ নভেম্বর ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে শীর্ষ জুয়াড়ি ও সরকারি কর্মচারীসহ ৩ জন আটক

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:০২:২০, ২৫ জুন ২০২২

সিদ্ধিরগঞ্জে শীর্ষ জুয়াড়ি ও সরকারি কর্মচারীসহ ৩ জন আটক

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মারামারির ঘটনায় এলাকার শীর্ষ দুই জুয়াড়িসহ চতুর্থ শ্রেনীর সরকারি এক কর্মচারীকে আটক করেছে থানা পুলিশ। 


বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ১ নং ওয়ার্ডের মিজমিজি কালুহাজী রোড এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।


আটককৃতরা হলো, কালুহাজী এলাকার শীর্ষ জুয়াড়ি মো: আলেক মিয়া (৩৮), মো: আল-আমিন (৩২) ও চতুর্থ শ্রেনীর সরকারি কর্মচারী নৈশ প্রহরী সৈয়দ আলী (৪৮)। তাদেরকে শুক্রবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

 


সূত্রে জানা যায়, এলাকার শীর্ষ জুয়াড়ি মো. আলেক মিয়া, মো. আল-আমিন ও সরকারি কর্মচারী নৈশ প্রহরী সৈয়দ আলীর সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিলো। টাকা পয়সা নিয়ে প্রায় সময়ই মারামারির ঘটনা ঘটে। 


তাদের মধ্যে চলা এই বিরোধ একাধিকবার মিমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন স্থানীয়রা গন্যমান্য ব্যাক্তিরা। তাদের দু’জনেই অঢেল সম্পদের মালিক হওয়ায় কেউ কাউকে তোয়াক্কা করে না এমনকি স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিদের কথাও মানছেন না। স্থানীয়রা জানান তারা সবাই বেপরোয়া। এ জন্যই কিছুদিন পরপর তাদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যাক্তি বলেন, মো: আলেক ও আল-আমিন এলাকার মধ্যে চিহ্নিত শীর্ষ জুয়াড়ি। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। আলেক তার বাসায় সন্ধ্যা হলেই জুয়াড় আসর বসায়। জুয়ার আসরের পাশেই রয়েছে মাদক সেবনের জন্য আলাদা ঘর। 


আলেকের শীর্ষ হচ্ছে মো: আল-আমিন। আলেক যা হুকুম করেন তা পালন করেন মো: আল-আমিন। আলেকের বাড়ির পুরো অংশ জুড়েই রয়েছে সিসি ক্যামেরা। যেনো কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আসলে সহজেই টের পেয়ে যান আলেক ও তার বাহিনী। 


প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতেই বাড়ির প্রতিটি যায়গায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছেন আলেক। সিসি ক্যামেরার কারনেই বিভিন্ন অপরাধ করেও থেকে যান ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তার গ্রেফতারে স্থানীয়রা খুঁশি হয়ে পুলিশকে ধন্যবাদও দিয়েছেন।


অপরদিকে স্থানীয় আরেক ব্যাক্তি বলেন, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে রোজ ২০০ টাকা বেতনে ঝাড়ুদারের চাকরি শুরু করেন সৈয়দ আলী ওরফে সবুজ। এরপর হন নৈশ প্রহরী। কয়েক বছরের মধ্যে বনে যান কোটি কোটি টাকার মালিক। 


এখন লাখ লাখ টাকা দান করেন তিনি। এলাকার অনেকে তাকে চেনেন কাস্টমসের বড় এক কর্মকর্তা হিসেবে। আট বছর আগেও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মাসে ৮০০ টাকা ভাড়ায় এক রুমে পরিবার নিয়ে থাকতেন সৈয়দ আলী। 


কয়েক বছর হলো চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে স্থায়ী হন নৈশ প্রহরী পদে। এই সময়ের মধ্যেই তিনি বনে গেছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। স্থানীয়রা জানান সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকার কালুহাজী রোডে একটি পাঁচতলা ও দুটি দোতলা বাড়িসহ একাধিক বাড়ি রয়েছে তার। 


এছাড়াও রাজধানীর রায়েরবাগে আছে এক কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট, রূপগঞ্জের গাউছিয়া এলাকায় রয়েছে তার তিন কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে পাঁচ কাঠার একটি প্লট। এসব অর্থের মালিক হয়েই বেপরোয়া দিন যাপন করছেন নৈশ প্রহরী সৈয়দ আলী।


এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিমসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, মারামারির ঘটনায় তাদেরকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।