সিদ্ধিরগঞ্জ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফিটনেস ও রুট পারমিট ছাড়াই চলছে দেড়শতাধিক যাত্রীবাহী নাফ ও শিমরাইল বাস। এসব বাস মালিকরা চাঁদাবাজদের কাছে জিম্মি। মালিকদের আক্ষেপ লাভের টাকা চাঁদায় শেষ হয়ে যায়।
শিমরাইল পরিবহন ও নাফ এক্সপ্রেস নামক দু’টি কোম্পানি এসব বাস থেকে মাসে অন্তত ৪৫ লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড ও শিমরাইল মোড় থেকে সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া ও মেঘনা পর্যন্ত দেড়শতাধিক যাত্রীবাহী বাস চলছে শিমরাইল পরিবহন ও নাফ এক্সপ্রেস প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির ব্যানারে।
প্রতিষ্ঠান দু’টি জয়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে রেজিস্ট্রেশন নিলেও বিআরটিএ (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ) ও আরটিসি (জেলা প্রশাসক) অনুমোদন নেই বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। ]তাছাড়া কোম্পানির অধিনস্ত অধিকাংশ গাড়ি যান্ত্রিক ক্রুটিযুক্ত, নেই ফিটনেস, সঠিক কাগজপত্র ও রুট পরমিট।
ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করে চালকরা খেয়াল খুশিমত যাত্রী উঠানামা করে মহাসড়কে বিশৃঙ্খলা ও যানজট সৃষ্টি করছে। সড়কে স্ট্যান্ড বানিয়ে নির্বিগ্নে চলছে বাসগুলো। গাড়িপ্রতি কোম্পানির নামে দৈনিক চাঁদা নিচ্ছে ১ হাজার টাকা করে।
পরিসংখ্যান মতে দেড়শতাধিক গাড়ি থেকে মাসে চাঁদার পরিমান দাঁড়ায় ৪৫ লক্ষাধিক টাকা। চাঁদার একটি অংশ স্থানীয় প্রভাবশালী ও হাইওয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের পকেটে যাচ্ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। তাই হাইওয়ে পুলিশ নিরব।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নাফ কোম্পানির নামে চলছে অর্ধশতাধিক বাস। যার অধিকাংশই রুট পারমিট নেই। ঢাকার মাহমুজুর রহমান নামে একজন কোম্পানির এমডি। দেখভাল ও চাঁদা আদায় করেন সুমন। শিমরাইল পরিবহনের এমডি আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের আপন ভাতিজা সোহেল।
]পরিচালনা করেন রাসেল ও চাঁদা তুলেন ম্যানেজার কামরুল। ওই কোম্মপানির নামে চলছে শতাধিক বাস। সোহেল নিজেও আলোচিত একটি হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ছিল। চাঁদাবাজির অভিযোগে তাকে একাধিকবার গ্রেফতার করে র্যাব ও থানা পুলিশ।
শিমরাইল পরিবহন কোম্পানির ব্যানারে একশ গাড়ি চলাচলের সত্যতা স্বীকার করে এমডি সোহেল বলেন, বাসগুলো ভাড়া হিসেবে চালাচ্ছি। মালিকদের দৈনিক ১হাজার ৮শ টাকা জমা দিয়ে বাকি টাকা অফিস খরচ হিসেবে নেওয়া হচ্ছে। এটা চাঁদাবাজি নয়। কাগজপত্র ঠিক আছে বলে দাবি করেন তিনি।
নাফ এক্সপ্রেস কোম্পানির এমডি মাহফুজুর রহমানের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার ফোন করলে রিংহলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে দেখভালের দায়িত্বে থাকা সুমন স্বীকার করেছেন, কিছু গাড়ির রুট পারমিট নেই। গাড়ি প্রতি দৈনিক আটশত টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
সাইনবোর্ড ও শিমরাইলের দায়িত্বে থাকা হাইওয়ে পুলিশের টিআই ( প্রশাসন) সরফুদ্দিন এ বিষয়ে বন্তব্য করতে অনিহা প্রকাশ করেন।
হাইওয়ে পুলিশের সহকারি পুলিশ সুপার অমৃত সূত্রধর বলেন, উপরের নির্দেশ রয়েছে সড়কে গাড়ি দাঁড় করিয়ে কাগজপত্র না দেখতে। তাই কোনটা বৈধ আর কোনটা অবৈধ তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছেনা। তবে এসব গাড়ি কিভাবে চলছে তা খতিয়ে দেখে ব্যাবস্থা নিব।