“মহান মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে সাধিত হলেও ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। জনগণ চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছে। পায়নি স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ। তাই ছাত্র-জনতাকে প্রতিবাদী হতে হয়েছে।
স্বৈরাচারী, নির্লজ্জ, বেহায়া সরকারকে বিতাড়িত করতে গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ এর সৃষ্টি। শত-শত শহীদের রক্তে গড়ে উঠা বন্ধনকে আর যেন কেউ ক্ষত-বিক্ষত করতে না পারে, সেলক্ষ্যে সকলকে সজাগ থাকতে হবে।”
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ সোমবার, সন্ধ্যে ৬টায় তল্লাস্থ সাধারণ পাঠাগার, নারায়ণগঞ্জ-এ আয়োজিত “বৈষম্যহীন জাতি গঠনে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা”- শীর্ষক আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
পাঠাগারের সভাপতি এ. এস. এম আব্দুল্লাহ রিপনের সভাপতিত্বে দিদারুল ইসলামের সঞ্চালনায় পরিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অতিরিক্ত কর কমিশনার, নারায়ণগঞ্জ মর্তুজা শরিফুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা মোঃ শমশের আলী, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক সংগঠক ও সাউথইস্ট ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট জাকির ইমতিয়াজ, আলোচনায় অংশ নেন- সাধারণ পাঠাগারের প্রাক্তন সভাপতি মঈন আহসান, জাহিদ হোসেন লাভলু, হাজী মিছির আলী কলেজের অধ্যাপক আফরোজা সুলতানা, সংগঠনের সহ-সভাপতি কুতুবউদ্দিন শাহীন এবং চৌধুরী মাহবুব রহমান স্বপন প্রমূখ।
সভায় গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ এর জাতীয় বীর শহীদ মানিক মিয়া ওরফে শারিক চৌধরীকে মরণোত্তর সম্মাননা প্রদান করা হয়। শহীদ শারিক চৌধুরী সরকারি তোলারাম কলেজের এমবিএ (২০২১-২০২২) শিক্ষার্থী ছিলেন। ৫ আগষ্ট ২০২৪ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের দক্ষিণ গেইট চানখারপুলে পুলিশের গুলিতে শাহাদাত বরণ করেন।
সভায় শহীদের পিতা আনিস চৌধুরী বলেন- আমার ছেলের কি অপরাধ ছিল? জনগণের অর্থে লালিত পুলিশ কেন আমার ছেলেকে নৃশংসভাবে খুন করলো? আমি আমার ছেলেসহ সকল খুনের বিচার চাই। খুনি হাসিনাসহ দোসরদের ফাঁসি চাই। সভায় তার কান্নায় শোকাতুর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদেরকে কোন রাজনৈতিক দলের আজ্ঞাবহ হওয়া সমীচীন নয়। বিগত সরকারের আমলে অনেকেই সরকারকে রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত করে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে দেশ এবং জাতিকে হুমকির সম্মুখীন করেছেন। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। বৈষম্যের সূত্রপাত সেখানেই। সঙ্গত কারণেই পরবর্তী সরকারে যারাই আসুক তাদের কাছে প্রত্যাশা নিরাপদ জাতি, নিরাপদ বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে জাতীয় বীর শহীদ মানিক মিয়া ওরফে শারিক চৌধুরীকে মরণোত্তর সম্মাননা পদক এবং তার পিতাকে শ্রদ্ধার্ঘ্য প্রদান করা হয়। দিনব্যাপী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার প্রতিযোগিদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।