অদৃশ্য এক অটুট বন্ধনের নাম বন্ধুত্ব। জীবনে চলার পথে বন্ধু খুব প্রয়োজন। বন্ধু ছাড়া জীবন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। নশ্বর পৃথিবীর অনেক সম্পর্কের মাঝে বন্ধু অন্যতম। ‘বন্ধু’ ছোট্ট একটি শব্দ, কিন্তু এর ব্যাপ্তি সীমাহীন, এর গভীরতা অনেক। বন্ধু মানে আস্থা, নির্ভরতা।
বন্ধু মানে ভালোবাসা, যেখানে থাকে না কোনো স্বার্থ। বছরের পর বছর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলেও সত্যিকারের বন্ধুত্বের টানে বন্ধুকে খুঁজে পেতে মনের অদম্য ইচ্ছা বাসনা থেমে থাকেনা। মন ফিরে পেতে চায় ফেলে আসা দিন।
তেমনি থেমে যাননি নারায়ণগঞ্জ আয়কর বিভাগে কর্মরত রাসেল। দুই যুগ পর তার শিশুকালের দুই বন্ধু কবির এবং মাহবুবের দেখা পেলেন তিনি। এ যেনো এক রোমাঞ্চকর মূহুর্ত। মুহুর্তেই তিন বন্ধু হারিয়ে গেছেন শৈশবে। পুরোনো স্মৃতিগুলোতে বিমোহিত হয়ে উঠেন তারা। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কুশল বিনিময় করেন।
জানাগেছে, ১৯৯৬ সালে ১লা জানুয়ারি রাসেল যখন রূপনগর হাই স্কুলে (বর্তমান কামাল আহমেদ মজুমদার স্কুল) প্রথম শ্রেণীতে ভর্তি হয় তখন কবির এবং মাহবুব নার্সারী শ্রেণী হতে উর্ত্তীন হয়ে প্রথম শ্রেণীতে উঠলে তিন বন্ধুর প্রথম সাক্ষাৎ এবং পরিচয়।
তিন জনের মধ্যে খুবই ভাল সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। এভাবে চলতে চলতে ১৯৯৯ সাথে ৪র্থ শ্রেণীর ফাইনাল পরীক্ষার পর মাহবুব চলে যায় গ্রামের বাড়ী চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে। পরবর্তীতে ঐখানেই লেখা পড়া চালিয়ে যায়।
অন্যদিকে রাসেল আর কবির সেই আগের স্কুলে লেখাপড়া চালিয়ে যায়। এভাবে সকলে লেখাপড়া শেষ করে কর্মজীবনে প্রবেশ করে। রাসেল আয়কর বিভাগে, কবির প্রবাসে এবং মাহবুব প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক।
অনেক চেষ্টার পর ২০২৩ ফ্রেবুয়ারিতে রাসেল কবির তাদের স্কুলের মফিজ স্যারের কাছ থেকে মাহবুবদের গ্রামের একজনের ফোন নম্বর নিয়ে যোগাযোগ করেন রাসেল। পরবর্তীতে মাহবুবের বাবার সাথে যোগাযোগ করে এবং মাহবুবের সাথে কথা হয়। এরপর দীর্ঘ এক বছর পর গত ১৩ এপ্রিল প্রায় দুই যুগ পর তিনবন্ধুর আবারও দেখা হলো।
আবেগপ্লাবুত রাসেল বলেন, ছোটবেলার বন্ধুত্ব আলাদা জিনিস। এত বছর পর সেই বন্ধুকে খুঁজে পাওয়া যেন আকাশের চাঁদ পাওয়া। কখনো কল্পনাও করতে পারিনি যে ছোটবেলার বন্ধুকে আবার খুঁজে পাবো। এটার অনুভূতি বোঝানো সত্যি খুবই কঠিন।
দিন যায়, মাস যায়। ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে পার হয়ে যায় যুগ যুগ। কিন্তু বদলায় না বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব কখনো মলিন হয় না, থাকে চিরসবুজ। বেঁচে থাকুক মহাবিশ্বের সকল বন্ধুত্ব।