নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত আবারও ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি নজরুল ইসলাম নয়নের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট) জারী করেছে।
সম্প্রতি তার স্ত্রী মাহফুজা আক্তার হ্যাপীর দায়ের করা যৌতুক মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত এ পরোয়ানা জারী করেন।
হ্যাপীর দাবী যৌতুক না দিলে দ্বিতীয় বিয়ে করার হুমকি দিয়েছে নজরুল ইসলাম নয়ন। এতে দাবীকৃত যৌতুক না দেয়ায় সে দ্বিতীয় বিয়ে করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দুজনের ছবি প্রকাশ করেন।
এরআগে ২০১৭ সালে নজরুল ইসলাম নয়নের বিরুদ্ধে প্রথম যৌতুক মামলা দায়ের করেন হ্যাপী। পরে সে মামলায় উভয়ের আপোষ মিমাংসায় আদালত থেকে খালাশ পেয়েছে নজরুল। আর প্রথম মামলায় নজরুলের পক্ষে নিযুক্ত আইনজীবী সাইদুর রহমান এখন হ্যাপীর পক্ষে দ্বিতীয় মামলা দায়ের করেছেন।
অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান জানান, ২০১৭ সালে যে শর্তে হ্যাপীর সাথে নজরুল ইসলাম নয়নের আপোষ হয়েছিল সে শর্ত ভঙ্গ করে ফের যৌতুক দাবী করেছেন। এজন্য ন্যায় বিচারের স্বার্থে হ্যাপীর পক্ষে আইনজীবী হিসাবে নিযুক্ত হয়ে ৮ ফেব্রুয়ারী আদালতে মামলা করেছি। একই দিন আদালত নজরুল ইসলাম নয়নের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেছেন।
মাহফুজা আক্তার হ্যাপী জানান, গত বিএনপি সরকার আমলে ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলা থেকে পালিয়ে এসে ফতুল্লায় আত্মগোপন করেন নজরুল ইসলাম নয়ন। ওই সময় পাশাপাশি বাড়িতে বসবাস করায় প্রেমের সম্পর্কে আমাদের বিয়ে হয়।ৎ
বিয়ের পর বলেছেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে আমাকে তার বাড়ি নিয়ে যাবেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে অনেক বছর হয়। এর মধ্যে আমাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। যার নাম রাখা হয়েছে নাবিলা আক্তার। তার বয়স তখন চার বছর ছিলো।
তখন তাগিদ দিলে নয়ন বলতো সামনে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবো। নির্বাচনে জয়ী হয়ে আমাকে ও আমার মেয়েকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যাবে। পরে নির্বাচনের জয়ী হয়ে বাড়িতে তুলে নেয়নি। পরে মামলা করার পর আমাকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
এতে উভয় পক্ষের আইনজীবী ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে নজরুল ইসলাম বলেছে আমার কাছে আর কখনো যৌতুক চাইবেনা। তার দেয়া আশ্বাসে মামলা তুলে নেই। এরপর কয়েকবছর আমাদের সুখের সংসার ছিলো। ২/৩ বছর ধরে আবার সেই আগের মত নির্যাতন করছে। সে জানে যৌতুক দেয়ার ক্ষমতা আমার নেই তারপরও সে মোটা অঙ্কের টাকা যৌতুক দাবী করেন।
তিনি আরো বলেন, ২ ফেব্রুয়ারী নজরুল তার বড় ভাই মোবারককে সাথে নিয়ে আমাদের ফতুল্লার বাসায় এসে হুমকি দিয়ে বলেন টাকা না দিলে দ্বিতীয় বিয়ে করবেন। তখন যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানাই। কিছুদিন পর ফেসবুকে দেখি শিশু সন্তানসহ দ্বিতীয় স্ত্রীর ছবি পোষ্ট করেছে। বিষয়টি দেখে মানুষিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ি।
তারপর নজরুলের পক্ষের আইনজীবী সাইদুর রহমান স্যারকে জানাই। সে নজরুলের সাথে কথা বলে কোন সমাধান করতে পারেনি। এরপর তিনিই আমাকে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দিয়ে আদালতের দ্বারস্ত করেন।
হ্যাপী ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের দেলপাড়া গ্রামের মাইনদ্দিন মিয়াজীর মেয়ে। আর নজরুল ইসলাম নয়ন ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলার ভাবনী কোনা কাজী বাড়ির মৃত. আফতাব উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে।