বিএনপির ডাকা অবরোধের তৃতীয়দিন বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) ভোরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে কাভার্ড ভ্যানে আগুন দেয়ার ঘটনায় গ্রেফতার ছাত্রদলের চার নেতা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট শামসুর রহমান এবং সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে পৃথকভাবে তাদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করা হয় বলে জানান নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো: আসাদুজ্জামান।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়া আসামিরা হলো রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তাওহিদুল আলম জিসান (২১), গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ মাওলা বিন সাজু ওরফে গোলাম সারোয়ার সাজু (২১), রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের কার্যকরী সদস্য মেহেদী হাসান মিরাজ (২১) ও মো: হাসিব (২২)।
সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো: আসাদুজ্জামান জবানবন্দি প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদানের পর আদালতের নির্দেশে আসামিদের জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে গ্রেফতারকৃত চার আসামি গোলাম সারোয়ার সাজু, মো: হাসিব, তাওহিদুল আলম জিসান ও মেহেদি হাসান মিরাজকে আদালতে হাজির করে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে চার আসামির মধ্যে রাজু ওরফে গোলাম সারোয়ার সাজু ও মো: হাসিবের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট শামসুর রহমানের আদালতে। একই সময় অপর দুই আসামি তাওহিদুল আলম জিসান ও মেহেদি হাসান মিরাজের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, অবরোধের সমর্থনে বৃহস্পতিবার ভোরে রূপগঞ্জ উপজেলার কাঞ্চন পৌরসভার কুশাবো এলাকায় এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে তুলাবোঝাই একটি কাভার্ড ভ্যানে অগ্নিসংযোগ করে উল্লেখিত আসামিরাসহ তাদের সহযোগিরা। এসময় কাভার্ড ভ্যানটির চালক হেলালের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে কাভার্ড ভ্যানে অগ্নি সংযোগকারিরা তিন থেকে চারটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটয়ে আতংক সৃষ্টি করে। খবর পেয়ে মহাসড়কে টহল ডিউটিরত পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গেলে সহিংসতা সৃষ্টিকারিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হাতেনাতে চারজনকে আটক করলে তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গাড়িতে আগুন দেয়া ও কক টেল বিস্ফোরণ করার কথা স্বীকার করে। পরে এ ঘটনায় পুঁড়িয়ে দেয়া কাভার্ড ভ্যানের চালক মো: হেলাল রূপগঞ্জ থানায় বাদি হয়ে মামলা করেন।
মামলায় ৩৬ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা আরও বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ এফ এম সায়েদ বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামি ৪জনই ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের পদধারি নেতা। তাদের প্রত্যেকের দলীয় পদ আছে বলে আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।