নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শনিবার,

২৩ নভেম্বর ২০২৪

নারায়ণগঞ্জে ৫টি আসনে ৪৫ জন এমপি হতে চান

নারায়ণগঞ্জ টাইমস:

প্রকাশিত:২২:৫৫, ২ ডিসেম্বর ২০২৩

নারায়ণগঞ্জে ৫টি আসনে ৪৫ জন এমপি হতে চান

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৫টি সংসদীয় আসন থেকে আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টি, তৃণমূল বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৪৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে ১৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। এই সকল প্রার্থীর সবাই দ্বাদশ সংসদের এমপি হতে চান। মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার পর তারা রীতিমত স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনি প্রস্তুতি সভাও করছেন। কোন কোন প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে চলছে মিছিল, পথ সভা। তবে এ নিয়ে দুই প্রার্থীকে শোকজও করা হয়েছে। আবার এক প্রার্থীর নির্বাচনী শোডাউনে অস্ত্রের মহড়া দেখা গেছে। তাকেও শোকজ করেছে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি। শুক্রবার তিনি লিখিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। এছ্ড়াা রোববার (৩ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী শামীম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে জাতীয় পাটির মনোনীত প্রার্থী লিয়াকত হোসেন খোকা তাদের শোকজের ব্যাখ্যা দিবেন।


নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহমুদুল হক জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার শেষ সময়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৪৫ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন। 


নির্বাচন অফিস সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসন থেকে ৮ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান ভুইয়া, সহ সভাপতি ও মন্ত্রী গাজীর ছেলে গোলাম মর্তুজা পাপ্পা, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মনোনীত প্রার্থী ফকির মোহাম্মদ আফাজ উদ্দিন মোল্লা, তৃণমূল বিএনপি মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রার্থী একেএম শহীদুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়নাল আবেদীন চৌধুরী, জাকের পার্টির জুবায়ের আলম, জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম আসনে মনোনয়পত্র জমা দিয়েছেন।


নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসন থেকে ৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, তৃণমূল বিএনপি থেকে আবু হানিফ, জাকের পার্টির মো: শাহজাহান, স্বতন্ত্র প্রার্থী জি কে মামুন দিদার, স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজী মো: শরীফুল ইসলাম, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী আলমগীর সিকদার লোটন মনোনয়নপত্র জমা দেন।


নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসন থেকে ১৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুল্লাহ আল কায়সার, জাকের পার্টির জামিল মিজি, তরিকত ফেডারেশনের মজিবুর রহমান হানিফ, বিএনএম এর প্রার্থী এ বি এম ওয়ালিউল্লাহ রহমান খান, বাংলাদেশ কংগ্রেস এর প্রার্থী সিরাজুল হক সিরাজ, বাংলাদেশ সুপ্রিমপার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন, ইউনাইটেড ডেমোক্রেডিট পার্টির প্রার্থী নারায়ণ দাস, এছাড়া আওয়ামীলীগের প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল কায়সারের স্ত্রী রুবিয়া সুলতানা, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষনা উপ কমিটির সদস্য এইচএম মাসুদ দুলাল, আওয়ামীলীগ নেতা এরফান হোসেন দীপ, মারুফুল ইসলাম ঝলক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। 


নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, জাকের পার্টির মুরাদ হোসেন জামাল, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী সালাউদ্দিন খোকা মোল্লা, স্বতন্ত্র পার্টি হিসাবে রাশেদুল ইসলাম. ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রার্থী মোঃ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মোঃ গোলাম মোর্শেদ রনি, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মোঃ আলী হোসেন, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির প্রার্থী মোঃ সেলিম আহমেদ, জাতীয়তাবাদী সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের প্রার্থী মোঃ সৈয়দ হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী মোঃ শহীদ-উন-নবী, স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী দেলোয়ার হোসেন মনোনয়পত্র জমা দিয়েছেন।


নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, তৃণমূল বিএনপি থেকে আব্দুল হামিদ ভাসানী, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থী ছামছুল ইসলাম, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রার্থী এ এম এম একরামুল হক, জাকের পার্টির প্রার্থী মোর্শেদ হাসান মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।


জেলার ৫টি আসনে এই ৫৪ জন প্রার্থীর কেউই থেকে নেই। যে যার মতো বিভিন্ন কৌশলে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। তবে অধিকাংশ প্রার্থীদের অভিযোগ মার্কা পাওয়ার আগেই ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করছে প্রতিনিয়ত। তাদের সমর্থকরা তাদের প্রার্থীর পক্ষে রীতিমত ভোট চাচ্ছে। যদিও দুই প্রার্থী এর জন্য শোকজ পেয়েছে।


প্রসঙ্গত: ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর রিটার্নিং কর্মকর্তারা তা বাছাই করবেন ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর।  ফলে ওইদিন বিকাল ৫টার পরই জানা যাবে নির্বাচনী মাঠে শেষ পর্যন্ত কারা লড়াই করছেন।


রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি (রোববার)।


সূত্র মতে, নারায়ণগঞ্জে বর্তমানে মোট ভোটার সংখ্যা ২২ লাখ ৫০ হাজার ৬৯১ জন। গত ৫ বছরে ভোটার বেড়েছে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৬৯ জন। নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৭৮২টি। ভোট কক্ষ ৪ হাজার ৯৮৩টি। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে ভোটকেন্দ্র ১২১টি ও ভোট কক্ষ  বেড়েছে ৩ হাজার ৬৭টি।