ফতুল্লার আলীগঞ্জে হাত বাড়ালেই মিলছে গাজাঁ, হেরোইন, ইয়াবা ট্যাবলেট, ফেনসিডিলসহ সকল প্রকার মাদক। আলীগঞ্জের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে আলিগঞ্জের প্রতিটি অলি-গলি ছেয়ে গেছে মাদকে। এতে করে মাদকের নিরাপদ ও সুরক্ষিত গোডাউন হিসেবে পরিচিতি পেয়েচে আলীগঞ্জ।
স্থানীয়দের তথ্য মতে, সরকারদলীয় প্রভাবশালী একটি মহলের ছত্রছায়ার পাশাপাশি একাধিক পুলিশ সোর্সেদের যোগসাজশে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা রমজান ওরফে কানা রমজানের ভাতিজা জুয়েল ওরফে ক্যাপ জুয়েল ও পুলিশের কথিত সোর্স রাসেল ওরফে সল্টু রাসেল ও সোর্স শান্ত নিয়ন্ত্রণ করছে আলীগঞ্জের সিংহভাগ মাদক বাজার। আর মাদক বাজারে এই দুই প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ীর রয়েছে প্রায় দুই ডজনেরও বেশী সেলসম্যান বা খুচরা বিক্রেতা। এছাড়াও বিচ্ছিন্ন ভাবে রয়েছে প্রায় শতাধিক খুচরা মাদক বিক্রেতা। প্রতিটি মাদক স্পট থেকে মাসোহারা নিয়ে তাদেরকে সর্ব প্রকার সহযোগিতা করে আসছে সোর্স জসিম।
তথ্য মতে, বেশ কয়েকমাস পূর্বে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হাতে হেরোইনসহ গ্রেপ্তার হয়েছিল সল্টু রাসেলের স্ত্রী কবিতা। জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও সল্টু রাসেলের সাথে মাদক বিক্রি শুরু করে কবিতা। বর্তমানে মাদক বিক্রির কৌশল পাল্টেছে এই মাদক ব্যাবসায়ী সল্টু রাসেল। মাদকের টাকায় বাড়ি কিনে ইতোমধ্যে সফল মাদক ব্যাবসায়ী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে সে। সেই সাথে মাদক বিক্রির স্থানও পরিবর্তন করেছে। বর্তমানে সল্টু রাসেলের প্রধান সেলসম্যান হিসেবে রয়েছে রাজিব। আর এই রাজিবের নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে প্রায় দেড় ডজনেরও বেশী সেলসম্যান। আইন-শৃংখলা বাহিনী এবং এলাকাবাসীর কঠোরতার মুখে আলীগঞ্জ ছাড়তে হয়েছিল সল্টু রাসেলকে। পরে সরকারদলীয় স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলকে ম্যানেজ করে আবারো এলাকায় প্রবেশ করে অতিতের মতো নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসা।
অপরদিকে প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা কানা রমজানের ভাতিজা জুয়েল ওরফে ক্যাপ জুয়েলও প্রকাশ্যে নির্বিঘ্নে বেচাকেনা করছে মাদক। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জুয়েলের হয়ে প্রায় ডজন খানেক সেলসম্যান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মসজিদ গলি থেকে রেল লাইন পর্যন্ত বিভিন্ন অলিগলিতে অবস্থান করে বিক্রি করছে নানা ধরনের মাদক।
সূত্র মতে, ক্যাপ জুয়েলের মাদক ব্যবসায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে তার বউ ও শশুর। এছাড়া আলীগঞ্জের মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্যতমরা হচ্ছে ডেনী, সোর্স আয়নাল ওরফে আইনু, সোর্স বগি সাইদ, খুকি মেম্বারের ভাই কবির, রাশু ওরফে রাসেল, মস্তাকিন, বগি সাইদ। এদের নিয়ন্ত্রণে আলীগঞ্জের বিভিন্ন গলিতে মাদক বিক্রেতারা হচ্ছে রেললাইনের পূর্ব পাশে গাঁজা ব্যবসায়ী খোকা, মেহারীর ছেলে সোহেল, রেললাইন মসজিদের সাথে আফসার ড্রাইভার, আলীগঞ্জ পূর্বপাড়ার বক্কর মেম্বার এর ভাই শেক্কুয়া, আলীগঞ্জ রেললাইনের পূর্ব পাশে মাদ্রাসা রোডে পোকনের ছেলে জসিম, আলীগঞ্জ রেললাইন মসজিদের পাশে আফসার ড্রইভারের ছেলে ইকবাল ড্রাইভার, আলীগঞ্জ তিন রাস্তার মোড় এলাকার ওয়াসিম, একই এলাকার বারেক এর ছেলে ড্রইভার জুয়েল ও তার ছোট ভাই আহাম্মদ এবং কালা বিল্লাল, ইজ্জৎ মহাজন এর বাড়ীর গল্লিতে সাবু মিয়ার ছেলে চোর শাহীন, একই এলাকার ইসহাক মিস্ত্রীর ছেলে কেপ রুহুল তার ছোট ভাই সজীব এবং বড় জাহানের ছেলে আক্তার, অলী হাজ্বীর ছেলে হাফিজ, আলীগঞ্জ মসজিদ রোডের সালাম ড্রাইভারের ছেলে রাশু, আলীগঞ্জ পাচঁতলার মোড়ে মোল্লার ছেলে মোস্তাকিম, আব্দুল মজিদের ছেলে সল্টু রাসেল, পাচঁতলার আলীগঞ্জ মোল্লা বাড়ীর মৃত আলমাছ মরল এর ছেলে চোল্লা মাসুম, কাজীপাড়ার নাজমুল, মোক্তার, আলীগঞ্জ জং বাড়ী মধ্যপাড়ার মৃত আবুল এর ছেলে লম্বা জুয়েল, জং বাড়ী মধ্যপাড়ার রাজীব,জং বাড়ীর টেবলেট সুমন, আলীগঞ্জ তিন রাস্তার মোড়ের হাইদু, ইসহাক মিস্ত্রীর ছেলে সজীব, আহাম্মদ, আরমান, আলীগঞ্জ মেইন রোডের বিপ্লব, মোফাজ্জল কাজীর ছেলে টার্নিং জুয়েল,আলীগঞ্জ অটো গ্যারেজের ইসলার ছেলে মোটু রুবেল, আলীগঞ্জ স’মিল রোড বাসেদ এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া মৃত আব্দুর সাত্তার মিয়ার ছেলে বাবু ড্রাইভার, ‘স’মিল এর পাশে জরিনার ছেলে সুন্দর রনি, ইজ্জৎ মহাজন এর বাড়ীর গল্লিতে পোটলা রুবেল, বাইট্টা ইমরান, আলীগঞ্জ পাচঁ তলার মোড়ে লেহার নাতি ইমরান, ইলিয়াসের ছেলে আওলাদ, আলীগঞ্জ নতুন বাজারের নাইম সহ আরো অনেকেই নির্বিঘ্নে মাদক ব্যবসা করে আসছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকার দলীয় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এবং প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তারা এই সকল মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে তাদেরকে নির্বিঘ্নে মাদক ব্যবসা করার সুযোগ করে দিচ্ছে। মাদকের সুরক্ষিত গোডাউন বলে পরিচিত আলীগঞ্জ এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে তারা।