আদমজী ইপিজেডে অবস্থিত কুনতং এ্যাপারেলস লিঃ ফ্যাশন সিটি’র শ্রমিকরা নারায়ণগঞ্জ শহরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। শুক্রবার (২২ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে তারা।
মানববন্ধনে কারখানার শ্রমিক সীমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শরীফ, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক এস.এম. কাদির, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সভাপতি রুহুল আমিন সোহাগ, কারখানা শ্রমিক রিনা, আঞ্জুমান আরা, জহির ও আনোয়ার।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ফ্যাশন সিটি মালিক কর্তৃপক্ষ ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বেপজা আইন অনুযায়ী ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ অক্টোবর ১ মাস কারখানা লে অফ করে। পরবর্তীতে আরও ৩ মাস অবৈধভাবে বেপজা আইন লঙ্ঘন করে কারখানা বন্ধ করে রাখে।
শ্রমিকেরা ডিসেম্বর ২১ বকেয়া বেতনের জন্য ২০২১ সালের জানুয়ারী মাসের ৭ তারিখে ইপিজেড এর গেটে অবস্থান করলে শিল্প ও থানা পুলিশ এবং বেপজা সিকিউরিটি মিলে বেপজা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শ্রমিকদের ব্যাপক মারধোর করে। এ ঘটনায় ৫০-৬০জন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়।
আবারও ৯ জানুয়ারী শ্রমিকেরা বকেয়া বেতনের জন্য ইপিজেড গেটে গেল কঠোর হামলা চালানো হয়। তারপর কারখানার শ্রমিকেরা গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারের শ্রম আইন মেনে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ১২ জানুয়ারী মালিক কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে ৭ দফার ভিত্তিতে লাগাতার কঠোর কর্মসূচী পালন করে।
৩ ফেব্রুয়ারী আদমজী ইপিজেড কর্তৃপক্ষ, ৫ ফেব্রুয়ারী সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি এবং ৮ ফেব্রুয়ারী নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। তীব্র আন্দোলনের ফলে বেপজা কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে ১৫, ১৬ ও ১৭ তারিখে শ্রমিকদের আইনগত প্রাপ্য পাওনা ১০০ শতাংশ থেকে ৩৬ শতাংশ পরিশোধ করে আরও ৬৪ শতাংশ বকেয়া প্রাপ্য পাওনা রয়েছে।
শ্রমিকদের পে স্লিপ দেয় ও অঙ্গীকার করে বেপজা কর্তৃপক্ষ বলে বকেয়া প্রাপ্য পাওনা আমরা অচিরেই পরিশোধের ব্যবস্থা করব কিন্তু আজ পর্যন্ত বকেয়া আইনগত প্রাপ্য পাওনা শ্রমিকেরা পায় নাই। ২০২১ সালের ফ্রেব্রুয়ারী থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৯ মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেল আজ অবধি পরিশোধ হয় নাই কেন।
এই ৯ মাসে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি কারনে বাসাভাড়া গ্যাস বিল বেড়ে যাওয়ায় শ্রমিকেরা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের সন্তানদের লেখাপড়া, পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা করতে না পারা সঞ্চয় না থাকার কারনে বিপদ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।
তাই অবিলম্বে শ্রমিকদের নামে অজ্ঞাত দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে বকেয়া প্রাপ্য পাওনা পরিশোধ করার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ। অন্যথায় শ্রমিকেরা কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।