
১৮তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসে নারায়ণগঞ্জ জেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল সহানুভূতির এক উষ্ণ বার্তা। ‘তারা আলাদা, তবে আমাদেরই মতো’-এই চেতনায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ অনুষ্ঠান।
সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
তার মানবিক ভাষণে উঠে আসে বিশেষ শিশুদের প্রতি সমাজের দায়িত্ববোধ ও ভালোবাসা।“ তারা কোনভাবেই সমাজের বোঝা নয়,” বললেন জেলা প্রশাসক। “তাদের মাঝেও আছে সম্ভাবনার আলো। আমাদের দায়িত্ব তাদের পাশে দাঁড়ানো, সাহচর্য ও সহমর্মিতায় তাদের এগিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি করে দেওয়া।”
ডিসি আরও বলেন, “সূর্যের যেমন তাপ না থাকলে তার মূল্য নেই, তেমনি মানবতাহীন সমাজও মূল্যহীন। তাই মানবতা দিয়েই বদল আনতে হবে দৃষ্টিভঙ্গির।”
রালিটি জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। রেলিতে অংশগ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হুসাইন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন) মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী, সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আসাদুজ্জামান সরদারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন এনজিও, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অটিজম পরিবারের সদস্যরা।
আলোচনা সভা শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রাঙ্গণে হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয় ১১ জন অটিজম ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মাঝে। জেলা প্রশাসক নিজ হাতে উপকারভোগীদের হাতে তুলে দেন এই সহায়ক যন্ত্রটি। উপস্থিত অনেকেই চোখের জল লুকাতে পারেননি সে সময়।
“এই সন্তানরা সমাজের সম্পদ। যদি আমরা পাশে দাঁড়াই, সঠিক সুযোগ দিই তবে তারাও দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে,” বলেন জেলা প্রশাসক। তিনি সমাজের বিত্তবান ও সচেতন মানুষদের অটিজম আক্রান্ত শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
এই কর্মসূচি শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয় বরং একটি মানবিক বার্তা ভিন্নতাই যে সৌন্দর্য, আর সহানুভূতিই যে প্রকৃত উন্নয়নের মূল ভিত্তি।