নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

রোববার,

০৬ অক্টোবর ২০২৪

ভারতের সাথে স্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবিতে শহরে ছাত্র ফেডারেশনের বিক্ষোভ সমাবেশ

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২১:২১, ২৫ জুন ২০২৪

ভারতের সাথে স্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবিতে শহরে ছাত্র ফেডারেশনের বিক্ষোভ সমাবেশ

ভারতের সাথে অধীনতামূলক ও দেশের  স্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার (২৫ জুন) বিকেল ৫টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি ফারহানা মানিক মুনার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সৃজয় সাহার সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্র ফেডারেশন এর সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান এবং সৌরভ সেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক ইউশা ইসলাম, অর্থ সম্পাদক শাহীন মৃধা, ফতুল্লা কমিটির সম্পাদক মুক্ত শেখসহ অন্যান নেতৃবৃন্দ।

সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রনেতা ফারহানা মুনা বলেন, 'দীর্ঘদিন যাবত ভারতের সাথে আমাদের পররাষ্ট্রীয় সম্পর্ক হলেও এই সম্পর্ক দিয়ে বাংলাদেশের কিংবা দেশের আপামর জনগনের স্বার্থের কিছু হাসিল হয় নাই।ভারতের সাথে আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক দিয়ে ভারত অনেক ফায়দা হাসিল করে নিলেও প্রাপ্তির খাতায় বাংলাদেশ একদমই শূন্য। 

সাম্প্রতিককালে শোনা যাচ্ছে বাংলাদেশের উপর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসাম পর্যন্ত যাওয়ার রুট ট্রানজিট দেওয়া হচ্ছে কিন্তু এতে বাংলাদেশ কী কী সুবিধা পাবে তা এখনও অস্বচ্ছ।বহদিন যাবত নেপাল ও ভুটানের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য ভারতের শিলিগুড়ি করিডোরের উপর রুট ট্রানজিট চেয়ে আসলেও তার কোন নিদান এখনোও পাওয়া যাইনি। 

যেখানে এখনোও তিস্তাসহ আরোও অনেক নদীর পানি বন্টণ ঠিক মতো হচ্ছে না, প্রায় প্রত্যেক বছর সিলেট-সুনামগঞ্জ সহ বাংলাদেশের অনেক জেলা প্লাবিত হয়, যার অন্যতম কারণ ভারতের সাথে অসম পানি চুক্তি। এমন নতজানু কূটনৈতিক সম্পর্ক রাষ্ট্রের স্বাধীন-সার্বভৌমত্বকে হুমকির মধ্যে ফেলে। 

ফলে সময় এখন দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-আত্মমর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ের। বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন দেশের আপামর ছাত্র-তরুণদের সংগঠিত করে বুক চিতিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার এই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেবে।'

সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান আরোও যুক্ত করেন, সম্প্রতি আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে যান। এই সফরে ভারতের সাথে দশটি সমঝোতা স্মারক সই হয়, যার মধ্যে অন্যতম রেল ট্রানজিট চুক্তি। এই চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের ট্রেন বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্য গুলোতে প্রবেশ করবে। 

এতে করে ভারতের যাতায়াত সময় এবং খরচ অনেকটা কমে আসবে। তবে এখানে প্রশ্ন হচ্ছে এই চুক্তিতে বাংলাদেশের লাভ কি। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী একটি দেশ ২য় দেশের উপর দিয়ে ৩য় দেশে পন্য পরিবহন করতে চাইলে ২য় দেশকে নির্দিষ্ট ফি প্রদান করে পন্য আনা-নেয়া করতে পারবে তবে কোনো দেশ অপর দেশের উপর দিয়ে নিজের দেশেই পন্য আদান-প্রদান করতে চাইলে এই আইনের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। 

আমরা দেখতে পাবো বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপাল এবং ভুটানের সাথে ট্রানজিকশন সুবিধা চাচ্ছে যা আইন অনুযায়ী যৌক্তিক কিন্তু ভারত এখনও তার অনুমোদন দেয়নি।

অথচ ২০১০সাল থেকে বাংলাদেশের নৌবন্দর ব্যাবহার করা, ২০১৮সাল থেকে চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর ব্যবহার করা এবং ট্রান্সসিপমেন্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পন্য আদান-প্রদানের সুযোগ পেয়ে আসছে ভারত। 

এই চুক্তির মধ্য দিয়ে সরাসরি নিজেদের ট্রেনের মাধ্যমেই ট্রানজিট সুবিধা পেতে যাচ্ছে ভারত কিন্তু বাংলাদেশ এতো সুযোগ সুবিধা দেয়ার পরেও কি পাচ্ছে সেই প্রশ্ন থেকে যায়।

অপর দিকে আমরা দেখবো ভারতের সাথে তিস্তা সহ ৫৩টি নদীর পানি বন্টন নিয়ে এখনো কোনো সুরাহা হয়নি, সীমান্তে হত্যার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
 

সম্পর্কিত বিষয়: