ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ.এইচ.এম সফিকুজ্জামান সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের খাদ্য বিভাগ পাঁচ-ছয়টি কর্পোরেট গ্রুপের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যে কোন খাদ্য সামগ্রীর সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে।
এসব মজুতদারদের সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে ভোক্তাদের মধ্যেও সিন্ডিকেট গড়ে তোলা দরকার। ক্রেতারা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পরিমাণ কোনো ভোজ্য পণ্য ক্রয় না করলে অসাধু ব্যবসায়ীরা সংকট সৃষ্টি করে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয়ার আর কোনো সুযোগ পাবেনা।
এক্ষেত্রে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে তাদের বিষয়ে তথ্য দিলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অ্যাডভোকেসি কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন তিনি। এদিন ভোজ্যতেল ক্রয় বিক্রয়ে অনিরাপদ বন্ধে ব্যবসায়ী ও অংশীজনদের সাথে কথা বলেন তিনি।
এসময় সফিকুজ্জামান আরও বলেন, এমন কোনো পণ্য নেই যা এদেশে নকল হচ্ছে না। সত্যিকার অর্থে যদি কেউ সৎভাবে ব্যবসা করতে চান, তিনি এদেশে টিকে থাকতে পারবেন না।
আলোচিত ব্যবসায়ী খলিল কম দামে মাংশ বিক্রি করায় হত্যার হুমকি পান। হার্টের রিং, ডায়বেটিকের স্ট্রিক পর্যন্ত নকল হচ্ছে। কী ভয়াবহ ব্যাপার। আমরা নারায়ণগঞ্জে একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিতে অভিযান চালিয়ে দেখেছি সেখানকার সকল পন্য নকল।
তিনি বলেন, অনেকেই আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, বাংলাদেশ সিঙ্গাপুরের মতো হয়েছে কিনা। আমি বলি, সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের মতো হয়েছে। আমার দেশের মেট্রোরেল সিঙ্গাপুরের চেয়ে বেটার। আমরা এখন সাবমেরিন ক্যাবলের যুগে ঢুকেছি, স্মার্ট বাংলাদেশের পথে হাঁটছি। আমার এখন কর্মক্ষম মানুষ দরকার।
কিন্তু ড্রামের তেল খেয়ে কিভাবে সেই কর্মক্ষম মানুষ তৈরি হবে? প্রতিদিন ঢাকা সিটিতেই ৫-১০ হাজার রোগী কেবল হার্টের চিকিৎসা করতে আসে।
আমার ধারণা পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ বিক্রি হয় এদেশে। অল্প মূল্যে বিক্রির অজুহাত দিয়ে ড্রামের তেলের ব্যবসা করছেন। অথচ ড্রামের তেল খেয়ে জনসাধারণ দুরারোগ্য বিভিন্ন ব্যধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। আগে দেখতাম, অবসরের পর মানুষের হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে, কিন্তু এখন ৩০ বছরের ছেলেদেরও অহরহ এটি হতে দেখা যাচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হকের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের বিভাগীয় প্রধান (রোগতত্ত্ব ও গবেষণা) প্রফেসর সোহেল রেজা চৌধুরী, ভোক্তা অধিদপ্তরের পরিচালক ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) জহিরুল ইসলাম, ভোক্তা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতিয়া সুলতানা, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুশিউর রহমান, ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সেলিমুজ্জামান প্রমুখ।