নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

১৮ অক্টোবর ২০২৪

সরকার নির্ধারিত দরে মিলছে না সয়াবিন ও চিনি

ডিম-মুরগি, পেঁয়াজ, আদা, রসুনের সাথে বেড়েছে নিত্য পণ্যের দাম, সবজির বাজারও চড়া

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:২২:০৭, ১৯ মে ২০২৩

ডিম-মুরগি, পেঁয়াজ, আদা, রসুনের সাথে বেড়েছে নিত্য পণ্যের দাম, সবজির বাজারও চড়া

নারায়ণগঞ্জ নগরীর বাজারগুলোতে সরবরাহ ভালো থাকা সত্ত্বেও বেড়েই চলেছে নিত্যপণ্যের দাম। চলতি মাসের শুরুতে সরকার সয়াবিন ও চিনির বাজার মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে ওই দরে পাওয়া যাচ্ছে না এসব পণ্য।

 

তেল ও চিনির দাম দফায় দফায় বেড়ে রেকর্ড ছুঁয়েছে।  সপ্তাহের ব্যবধানে ফের বেড়েছে মুরগি, ডিম, পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম। এছাড়া সবজির বাজারও চড়া। 


শুক্রবার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নির্ধারিত দরের চেয়ে ১৪ থেকে ২০ টাকা বেশি দরে খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে লিটার প্রতি ১৯০-১৯৫ টাকা। যা সরকার ১২ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করছিল ১৭৬ টাকা।

 

আর ১৯৯ টাকা দর নির্ধারণ করা দেওয়া বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ২০৫ টাকার উপরে। অন্যদিকে, চিনির বাজার দর ১৬ টাকা বাড়িয়ে ১২০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও এ পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকা। 


খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকাররা নির্ধারিত দরে চিনি ও তেল বিক্রি না করায় তাদের পক্ষে এসব পণ্য নির্ধারিত দামে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে কয়েকদিন স্থিতিশীল থাকার পর বাজারে আবারো ২৫-৩০ টাকা বেড়েছে  ব্রয়লার, সোনালি ও পাকিস্তানি মুরগির দর। 


নগরীর বিভিন্ন বাজারে গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯৫-২০৫ টাকা বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ২২০-২৩০ টাকা। সোনালি মুরগি ৩০৫-৩১০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৩২০-৩৩০ টাকা। পাকিস্তানি কক ৩২০-৩৩০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৩৬০-৩৭০ টাকা। 


তবে দেশি মুরগির দর প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে, বিক্রি হয়েছে ৬২০-৬৫০ টাকা। এছাড়া গরুর মাংস ৭৫০-৮৫০ এবং খাসির মাংস ১০৫০-১১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এদিকে ব্রয়লার মুরগির লাল ডিমের দাম আবারো বেড়েছে, বিক্রি করা হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকা। এছাড়া সোনালি মুরগির ডিম ১৬০, হাঁসের ডিম ১৮০ এবং দেশি মুরগির ডিম ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


আবহাওয়াজনিত কারণে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সবজি কম আসায় দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এক মাসের ব্যবধানে বাজারে আলুর দাম ১০-১৫ টাকা বেড়ে ৩৫-৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। এক মাস আগে ৬০-৭০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়। 


এছাড়া বেগুন ৬০, ঢেড়স ৮০-৯০, চিচিঙ্গা ৬০, বরবটি ও করলা ৮০-৯০, কচুর লতি ৫০-৬০, বাঁধাকপি ৪০-৫০, মিষ্টি কুমড়া ৪০-৫০, টমেটো ৪০-৫০, পেঁপে ৬০-৭০, লাউ ৫০-৬০, গাজর ৫০-৬০, পটল ৫০-৬০, মুলা ৬০-৮০, তিতা করলা ৮০-১০০, শিম, শসা এবং ঝিঙ্গা ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।


বাজারে নিত্যপণ্যের মধ্যে প্রতি কেজি দেশি মসুর ডাল ১৩৫-১৪০, আমদানি করা মসুর ডাল ১৪০-১৪৫, মুগ ডাল ১৩০-১৩৫, মটর ডাল ৬২-৭০, প্যাকেটজাত আটা ৬৫-৬৮, প্যাকেটজাত ময়দা ৭৫-৭৭, চায়না রসুন ১৪০, দেশি রসুন ৯৫-১০০, আমদানি করা রসুন ১৪০-১৪৫ এবং আমদানি করা আদা ২০০-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


মাছের মধ্যে লইট্যা ২২০-২৫০, পোয়া ৪০০-৫০০, চইখ্যা ২৮০-৩০০ এবং ছোট কোরাল ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, রুই ২৫০-৩৮০,কাতাল ২৫০-৩৫০, মৃগেল ২০০-২৫০, পাঙ্গাস ২০০-২৫০, বাইল্যা ৪০০-৫০০, রিকশা ৪৫০-৫০০, মাগুর ও শিং ৪০০-৬০০, পাবদা ৩৫০-৪৫০, চিংড়ি ৬০০-১০০০ এবং দেশি কই ৩৫০-৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। 


দিগুবাবু বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদুল ফিতরের পর থেকেই সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম উর্ধ্বমুখী। এখন সামনে ঈদুল আজহা। আদা, রসুন, পেয়াঁজসহ  মসলা সামগ্রীর দাম আরও বাড়বে।


অপরদিকে ক্রেতারা বলছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম উর্ধ্বমুখী হওয়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ বেশি বেকায়দায় পড়েছেন। আমদানি বন্ধের অজুহাতে বাজার সিন্ডিকেট ইচ্ছামতো পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। সরকারের উচিত নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা।
 

সম্পর্কিত বিষয়: