নারায়ণগঞ্জ টাইমস | Narayanganj Times

শুক্রবার,

২২ নভেম্বর ২০২৪

সনেট ও অলিদ বাহিনীর ৬ সদস্য ধরা পড়লেও মূল হোতারা অধরা

নারায়ণগঞ্জ টাইমস

প্রকাশিত:০৪:৩৭, ২১ মে ২০২২

সনেট ও অলিদ বাহিনীর ৬ সদস্য ধরা পড়লেও মূল হোতারা অধরা

নারায়ণগঞ্জ সদর থানার হাজিগঞ্জ এলাকায় র‌্যাবের অভিযানে সনেট ও অলিদ বাহিনীর ৬ জন চাঁদাবাজ গ্রেপ্তার হলেও অধরা রয়েছে এ বাহিনীর মূলহোতা সনেট (৩৪), ওলিদ (৩৬), সোহাগ (৩৫), মনির (৩৬),  রাজীব (৩২) ও নুপুর (৩২)। 


এরা খানপুর, কিল্লারপুল, তল্লা,  হাজিগঞ্জ, নবীগঞ্জ গুদারাঘাট, এমসারকেস পানির কল, পাঠানটুলি, ফতুল্লার নিউ হাজিগঞ্জ ও পশ্চিম তল্লা এলাকায় নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। এ এলাকার বাসিন্দারা তাদের ভয়ে আতংকে দিনাতিপাত করে আসছে। 


মাদকে স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছে এ এলাকাগুলোতে। এ নিয়ে প্রায়শই তাদের হাতে লাহ্নিত ও অপদস্ত হচ্ছে বাসিন্দারা। নারায়ণগঞ্জ প্রভাবশালী এক পরিবারের নাম ভাঙ্গিয়ে অত্র এলাকা গুলিতে ভয়ঙ্কর অপরাধ করে যাচ্ছে এই সন্ত্রাসীরা। ওই পরিবারের নামের কারণে কেউ নিচ্ছে না প্রশাসনিক কোনো হস্তক্ষেপ। ফলে একের পর এক অপরাধ সংঘটিত হয়ে যাচ্ছে।


জানাগেছে, এই চক্রটি নারায়নগঞ্জ শহরের একটি প্রভাবশালী পরিবারের লোক দাবী করে স্থানীয় এলাকাসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছে বিরদর্পে। তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা ও সদর মডেল থানায় হত্যা, গুম, চাঁদাবাজি, অপহরণ, মারধরসহ মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে। 


সনেট বাহিনী এতটাই ভয়ংকর যে তাদের অস্ত্রের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না।ি দনে ও রাতে তারা সবসময় সংঘবদ্ধ হয়ে এলাকায় মহড়া দিয়ে থাকে। 


অনেকের মতে শুধুমাত্র নেশার টাকার জন্যে এরা নারায়ণগঞ্জ জেলা ঐতিহ্যবাহী পরিবারের নাম বিক্রি করে নানা ধরনের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এদের জন্যে অতিষ্ঠ সাধারণ নিরীহ জনজীবন, এদের প্রতিকার একন্ত জরুরী।


মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা তাদের নিত্যদিনের রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ প্রতিবাদ করলে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হতে হয়। কিন্তু এই সন্ত্রাসীদের দিন দিন উৎপাত বেড়েই চলছে। এই বাহিনীর মধ্যে সকলেই মাদকাসক্ত এবং অধিকাংশ চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী তারা বিভিন্ন মাদকের স্পট নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।   


তাদের গ্রুপে রয়েছে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নুপুর। যাকে মাদকা সম্রাজ্ঞী বলে সবার কাছে চিহ্নিত। যার রয়েছে একাধিক মাদক মামলা। নারী ব্যবসার ও মাদক ব্যবসার কারণে কয়েক বার জেল খেটেছেন নুপুর, জানা গেছে সনেট ও ওয়ালিদ বাহিনীর আর্থিক সহায়ক হলেন মাদক সম্রাজী নুপুর।


এই সনেট ও অলিদ গ্রুপকে ব্যবহার করে নুপুর চালিয়ে যাচ্ছেন তার বিভিন্ন মাদকের স্পট। নুপুরকে কেউ বাধা দিতে আসলে শীর্ষ সন্ত্রাসী সনেট ও ওলিদ  গ্রুপ  সেই ব্যক্তি দের উপর হামলা চালায়। যার ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস করে না।


গুদারাঘাট, পানির কল, এমসার্কেস এই এলাকাগুলিতে সনেট ও অলীদ গ্রুপের মাদকের নিয়ন্ত্রক হলো শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ফর্মা সানি (৩২), রাজীব ( ৩২), মুরগির শরিফ। মুরগী শরিফকে অনেকে ফর্মা শরিফ বলে চিনে। হাজীগঞ্জ বাজারে তার রয়েছে একটি মুরগির দোকান। সেখান থেকে মুরগির ব্যবসার অন্তরালে চলে ফেন্সিডিল ও ইয়াবা ব্যবসা।


হাজীগঞ্জ বাজারে অনেকেই বলেন ও ফর্মার শরীফ (২৪) একটি রিক্সাওয়ালা ছেলে ওর চলাফেরা দেখলে মনে হয় ও যেন কোটিপতির ছেলে। সে  প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছে। নিজেকে প্রশাসনের সোর্স পরিচয় দেয় কখনো বা পরিচয় দেয় হাজী সাহেবের লোক।


ফরমা জামানের ভাগিনা রাজিব নিউ হাজিগঞ্জ পেপার মিল, মুলি বাঁশের মোড় ও ওয়াব্দারপুল এলাকায় এই বাহিনীর নিয়ন্ত্রক দাতা। মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত। তার বিরুদ্ধে অনেক নিরীহ মানুষকে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে।


কেউ কিছু বললে চলে আসে সনেট গ্রুপ আপহরণ করে তুলে নিয়ে যায়। পরে শীতলক্ষ্যায় হাউজিংয়ে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করে।  


এ বিষয়ে সদর মডেল থানার ওসি শাহজামাল বলেন, এ সকল সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাংদের বিষয়ে তালিকা করে আমাদের পুলিশ কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া এদের বিরুদ্ধে কেউ যদি থানায় অভিযোগ করে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।