নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লার বক্তাবলী ইসলামিয়া সিনিয়র আলিম মডেল মাদরাসার অধ্যক্ষ আ ন ম অলীউল্লাকে বেদম মারধর ও গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যার প্রধান ইন্ধনদাতা মুফতি মুহা: মোখতার হোসাইন নতুন মিশনে নেমেছেন। জামায়াত করার অভিযোগ এনে অধ্যক্ষ ওলী উল্লাকে পদ থেকে সরানোর জন্য বিগত দিনে সকল ধরনের অপতৎপরতা চালানো মোখতার হোসাইন এবার শিক্ষার্থীদের উস্কানি দিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরী করছে।
মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের বিশৃঙ্খলাসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ সদর ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অধ্যক্ষ ওলী উল্লাহ।
একই সাথে তিনি কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি ,মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে অভিযোগ দায়ের করেন।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, মোখতারের খায়েশ বক্তাবলী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হওয়া। অধ্যক্ষ ওলী উল্লাকে মাদ্রাসা থেকে সরাতে পারলে মোখতারের অধ্যক্ষ হওয়ার পথ অনেকটা পরিস্কার হয়ে যায়। বিধি বিধানের কোন তোয়াক্কা না করে এজন্য কয়েক বছর ধরে তিনি চালিয়ে যাচ্ছে নানা ধরনের অপকর্ম।
যখন যে দল ক্ষমতায় আসে সে দলের কাঁধে সওয়ার হন তিনি। নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য তিনি গত ৯ জানুয়ারি স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের দিয়ে অধ্যক্ষ ওলী উল্লাকে বেদম মারধর ও গলাটিপে হত্যার চেষ্টা করেন মোখতার । ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর সেদিনের মারধর ও হামলা জন্য মোখতারের সংশ্লিষ্টতার কথা জানান আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতা। তারা বলেছেন, অধ্যক্ষ ওলী উল্লার উপর হামলা এবং মারধরের মুল ইন্ধন দাতাই মুফতি মোখতার হোসাইন। তিনিই মুলত উস্কানি দিয়ে সে দিনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে।
জানা গেছে, গত ৯ জানুয়ারি বক্তাবলী ইসলামীয়া আলিম মডেল মাদরাসার অধ্যক্ষ হিসেবে আ ন ম অলীউল্লা কে বেদম মারধর ও গলাটিপে হত্যার চেষ্টা করা হয়। এনিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত কমিটি গঠন করেন। প্রাণের ভয়ে প্রায় ৭ মাস অধ্যক্ষ ওলী উল্লা মাদ্রাসায় যেতে পারেনি। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক তিনি নিয়মিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দফতরে এসে অফিসিয়াল কার্যক্রম সম্পন্ন করেন।
এদিকে ইউএনও কাছে দেয়া অভিযোগে ওলী উল্লাহ জানান, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গত ১২ আগষ্ট থেকে তিনি মাদ্রাসায় গিয়ে দায়িত্ব পালন করেন। তার উপর যারা হামলা করেছে তিনি তাদের সাথে সকল ধরনের ভুলবুঝাবুঝি নিরসন করে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেন। অধ্যক্ষ ওলী উল্লার যোগদান মেনে নিতে পরেনি বহুরুপী আওয়ামীলীগের দোসর মোখতার হোসাইন। তিনি নতুন করে উস্কানি দেন শিক্ষার্থীদের।
বিধি বিধানের বাহিরে সাবেক ও বর্তমান কিছু শিক্ষার্থী দিয়ে এক সপ্তাহ সময় বেধে দিয়ে ৭ দফা দাবী দেন। মুলত মোখতার শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে ওলী উল্লাহকে অধ্যক্ষ পদ থেকে সরানোর পায়তারা করছেন বলে তিনি অভিযোগে তুলে ধরেন। ওলী উল্লাহ উপর বিগত দিনে আওয়ামীলীগের লোকজনের জুলুম এবং পট পরিবর্তনের পর আবার নতুন করে জুলুমের চেষ্টার ঘটনায় অনেকে হতবাক হয়েছেন।
জানা গেছে মুফতি মোখতারের অপকর্মের শেষ নেই। এর আগে একাধিকবার তিনি অপকর্মের দায়ে শোকজ খেয়েছেন। বিধি লঙ্ঘন করে চাকরির পাশাপাশি তিনি দীর্ঘদিন ধরে হজ্ব ও ওমরার ব্যবসা করে আসছেন। একই অভিযোগ, এর আগে তাকে শোকজ এবং আর এসব কাজ করবেন না এমনটা মুচলেকা দেয়ার পর আবারো একই কান্ড ঘটিছে চুড়ান্তভাবে মাফ চেয়ে পার পেয়েছেন। এখন তার একান্ত টার্গেট হলো ওলী উল্লাহকে অধ্যক্ষ পদ থেকে সরানো।