সিদ্ধিরগঞ্জে একাধিক মামলার আসামি মো: জসিম (৩৫) নামে এক পেশাধার ছিনতাইকারী ও মাদক ব্যবসায়িকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মিজমিজি টিসি রোড এলাকার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিমের বাড়ির সামনের গলি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে বিদেশী একটি চাকু (সুইচ গিয়ার) ও ছিনতাইকৃত দুটি মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত জসিম জসিম পাইনাদী নতুন মহল্লা এলাকার আবু সাঈদের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জসিম একজন পেশাদার ছিনতাইকারী ও মাদক ব্যবসায়ি। সে যুবলীগ কর্মী পরিচয়দানকারী মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী ফারুক ওরফে টাইগার ফারুক ওরফে চিকনা ফারুকের ভাই। ভাইয়ের শেল্টারের সে দিনের পর দিন অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। টাইগার ফারুক একটি হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামী। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছিল।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান জানান, কতিপয় দুষ্কৃতিকারি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দস্যুতা সংগঠিত করার জন্য টিসি রোড এলাকায় সমবেত হয়েছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জসিমকে আটক করে। দৌড়ে পালিয়ে যায় আরো ৩ জন। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
তিনি আরো জানান, আটক জসিমের বিরুদ্ধে পেনাল কোড আইনের ৩৯৩/৪১৩ ধারায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ আরও জানায়, গত বছর ১৮ নভেম্বর রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পুর্বপাড়া এলাকায় চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে এক কিশোরীকে (১৯) ধর্ষণ চেষ্টা চালিয়েছিল গ্রেপ্তারকৃত চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ি জসিম। এ ঘটনায় ভুক্তভোগি ওই কিশোরী বাদী হয়ে ১৯ নভেম্বর বাদী হয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার তথ্যমতে, ভুক্তভোগী কিশোরী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নাচ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। এক মাস পূর্বেগায়ে হলুদের একটি অনুষ্ঠানে নাচ করতে গিয়ে মাদক ব্যবসায়ি জসিমের সাথে কিশোরীর পরিচয় হয়। জসিমের সাথে কথা বার্তার এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী কিশোরীকে জসিম চাকরির ব্যবস্থা করে দিবে বলে আশ্বাস দেয়। এ জন্য ১৮ অক্টোবর চাকরি সংক্রান্ত কথা বলার জন্য জসিম তার এক ভাগ্নের বাসায় নিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে কিশোরীকে জোরপুর্বক ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে জসিম তাকে ঝাপটে ধরার পর ওই বাড়ির লোক টের পেয়ে বাহির থেকে দরজায় টোকা দিলে কৌশলে ভুক্তভোগী কিশোরী দরজা খুলে বের হয়ে যায়।
মিজমিজি পাগলাবড়ি এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, জসিম মূলত এলাকার একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ি ও ছিনতাইকারী। সে তার ভাই টাইগার ফারুক ওরফে চিকনা ফারুকের শেল্টারে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছে। জসিমের মাদক ব্যবসা নিয়ে অনেক নিউজও প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমে। তার ভাই চিকনা ফারুকও মাদক ব্যবসায়ি। ফারুকের কোন মাদক ব্যবসায়ি গ্রেপ্তার হলে চিকনা ফারুক বিভিন্নভাবে তদবির করে ছাড়িয়ে আনে। জমিস গ্রেপ্তার হওয়ার পরও একটি চিহ্নিত গ্রুপকে থানায় পাঠানো হয়। তারা কয়েক ঘন্টা মোটা অংকের টাকার অফার দিয়ে তদবির চালায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোন তদবিরই কাজে আসেনি।
এদিকে ছিনতাইকারী জসিম গ্রেপ্তার হলেও তার সহযোগিরা রয়েছে চিকনা ফারুকের শেল্টারে। চিকনা ফারুকের একটি বাহিনীর রয়েছে। ওই বাহিনীর বেশিরভাগ সদস্য মাদক, ছিনতাই, চুরিসহ নানা অপরাধের সাথে জড়িত। ফারুককে গ্রেপ্তার করলেই ওই অঞ্চলের ছিনতাই ও মাদক ব্যবসা বন্ধ হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এ ব্যাপারে তারা জেলা পুলিশ সুপার মো: জায়েদুল আলম পিপিএম (বার) এর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।