নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ৫ বছরের শিশু সোয়াইব হত্যা মামলায় তিন আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই মামলার আরেক আসামি নাছিরউদ্দিনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন ৬জন।
সোমবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রাজিয়া সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- রাজু মিয়া, ফজল হক ও জসিম উদ্দিন।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, রিনা, মোশরফ হোসেন, আবদুর রহিম ও আবদুস সালাম নামের চার আসামিকে খালাস দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুর রহিম জানান, ২০১৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সোনারগাঁ উপজেলার মঙ্গলেরগাঁও এলাকায় শান্তিনগর দারুন নাজাত নূরানী মাদ্রাসার প্রথম শ্রেনীর ছাত্র সোয়াইব হোসেন নিখোঁজ হয়। ঘটনার ছয়দিন পর ওই এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনের পাশ থেকে সোয়াইব হোসেনের গলাকাটা ও শরীর ঝলসে দেওয়া লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত সোয়াইবের বাবা নাজমুল হোসেন মাসুম ছেলেকে অপহরণের পর হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে মোশারফ হোসেন, রাজু মিয়া, ফজল হক, জসিম উদ্দিন, শিরসতালী, নাছির উদ্দিন, আলী আহাম্মদ ও রিনা বেগমসহ ১৩ জনকে আসামি করে সোনারগাঁ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি আরো জানান, এই মামলায় পুলিশ আসামি মোশারফ হোসেন, রাজু মিয়া, নাছির উদ্দিন, ফজল মিয়া, সিরাসতালী ও আলী আহাম্মদসহ আরো কয়েকজনকে গ্রেফতার করে। পরে আসামিরা শিশু সোয়াইবকে অপহরণের পর হত্যার দায় স্বীকার করে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট চাঁদনী রুপমের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও প্রদান করে। জবানবন্দিতে আসামিরা আদালতকে জানায়, নারীঘটিত বিরোধের কারণে শিশু সোয়াইব হোসেনকে অপহরণের পর প্রথমে গলা কেটে জবাই করে হত্যা করে। পরে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ কেটে বিচ্ছিন্ন করে এসিড দিয়ে শিশুটির পুরো শরীর ঝলছে দেয় তারা।
তবে নিহত সোয়াইবের পরিবার রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে এই মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়া সকল আসামির মৃত্যুদন্ড প্রত্যাশা করেছিলেন। এ ব্যাপারে তারা উচ্চ আদালতে আপীল করবেন বলে জানান নিহত সোয়াইবের বাবা ও মামলার বাদি নাজমুল হোসেন মাসুম।
আরো পড়ুন :নারায়ণগঞ্জে ২৪ ঘন্টায় আরও ৩৫ জন আক্রান্ত