নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় ৬জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে গিয়ে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় এক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হওয়ার ঘটনায় যুবলীগ নেতা ও কাঞ্চন পৌরসভার প্যানেল মেয়র পনির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পনির হোসেন কাঞ্চন পৌর যুবলীগের সহসভাপতি বলে জানা গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) রাতে কাঞ্চন পৌরসভার তারাইল এলাকায়।
এদিকে উভয় গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা করছে এলাকাবাসী।
ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মাহাবুুর রহমান জানান, কাঞ্চন পৌরসভার তারাইল এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে কাঞ্চন পৌরসভার প্যানেল মেয়র পনির হোসেন ও তার ভাই শহিদুল ইসলামের সাথে একই এলাকার আয়নাল হক ও সজিব মিয়ার বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আয়নাল হক, সজিব মিয়া, রবিউল ইসলাম, দুলাল মিয়াসহ ৭/৮জনকে বিরাব বাজারে পেয়ে কাউন্সিলর পনির হোসেন, তার ভাই শহিদুল ইসলামসহ ২০/২২ জন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। হামলায় আয়নাল হক, সজিব মিয়া, রবিউল ইসলাম ও দুলাল মিয়াসহ ৬জন আহত হন। খবর পেয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে কাউন্সিলর পনির হেসেন প্রাইভেটকার চালিয়ে তাকে (ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মাহবুবুর রহমান) চাপা দিয়ে দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করেন। গাড়ি চাপায় পায়ে গুরুত্বর আহত হন তিনি (ইন্সপেক্টর মাহবুবুর রহমান)।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় পুলিশ কাউন্সিলর পনির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে। আহতদের মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় আয়নাল হককে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ইন্সপেক্টর মাহাবুবসহ অন্যান্য আহতদের রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
তবে স্থানীয়রা জানায়, এলাকার আধিপত্য নিয়ে সোমবার রাতে উভয়ের মধ্যে এক দফা সংঘাত হয়। এর জের ধরে মঙ্গলবার রাতে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ উভয় পক্ষকে নিবৃত করতে মাঝে অবস্থান নেয়। এসময় প্যানেল মেয়র পনির হোসেন তার প্রাইভেটকারে চড়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে গেলে ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মাহবুবুর রহমান গাড়ি আটকে দাঁড়ায়। এসময় গাড়ির ধাক্কায় সে সামান্য আহত হয়। পরে পুলিশ প্যানেল মেয়র পনিরকে গ্রেপ্তার করে পরিস্থিতি শান্ত করে। তারা আরও জানান, সংঘর্ষে অংশ নেয়া দুই গ্রুপই যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মাহামুদুল হাসান বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা শুনে পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় দুইটি মামলা হয়েছে। তারাইল এলাকার সজিব মিয়া বাদি হয়ে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন। একই ঘটনায় পুলিশের কাজে বাধা প্রদাসহ হামলার অভিযোগে রূপগঞ্জ থানার এসআই আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অভিযুক্ত প্রধান আসামী কাঞ্চণ পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর পনির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।