নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পাঁচাইখা এলাকার শামীম মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় শিউলী আক্তারের। সেটা ২০১৮ সালের ২৩ আগস্ট। কিন্তু বিয়ের পরপরই শামীম জানতে পারে শিউলী সঙ্গে অন্য ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে মনমালিন্য হয়। এ নিয়ে ঝগড়াও হয় কয়েকবার। বিয়ে ৭দিনের মাথায় শামীম সিদ্ধান্ত নেয় শিউলীকে হত্যা করবে। পরিকল্পনা মতে, ৩১ আগস্ট রাতে ঘুমন্ত শিউলীকে ধারালো বটি দিয়ে কুপিয়ে ও গলা কেটে নৃসংশভাবে হত্যা করে শামীম। আগেই সে খাটের নিচে রেখে দিয়েছিল ধারালো বটি।
দীর্ঘ দুই বছর পর ঘাতক শামীম মিয়া তার স্ত্রী শিউলীকে হত্যার দায় স্বীকার করে রোববার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: মিল্টন হোসেনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দি দেয়।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন আসামী গ্রেপ্তারের পর জেল হাজতে ছিল।
আদালতের সূত্রমততে, ২০১৮ সালের ৩১ আগস্ট রাতে শিউলীকে হত্যার ঘটনায় নিহতের মা আমেনা বেগম ঘটনার তিন মাস পর ১ নভেম্বর বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিল। মামলা দায়েরের পর শামীমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে পুলিশ দীর্ঘ সময় মামলাটি তদন্ত করে। এক পর্যায়ে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে ২ দিনের রিমান্ডেও নিয়েছিল পুলিশ। তারপর ২০১৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর পুলিশ পুনরায় ৩ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিল।
এদিকে চলতি মাসের ১৯ সেপ্টেম্বর পিবি আইয়ের কাছে মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয়। আদালত এ মামলাটি শেষ পর্যন্ত পিবিআইকে তদন্ত করতে দিলে, পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তা আসামীর ৩দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। পরে শুনানি শেষে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে আসামি রোববার (২৫ অক্টোবর) আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হয় শামীম মিয়া।
নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন’র পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম বলেন, মামলা দায়েরের পর রূপগঞ্জ থানার তদন্ত কর্মকর্তা বিভিন্ন সময় রিমান্ডে নিয়ে হত্যাকান্ডের বিষয়ে জানার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আসামী স্বীকারোক্তি দেয়নি।
বিজ্ঞ আদালত গত সেপ্টেম্বর মাসে জেলা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন। আসামী শামীম তার নববধু শিউলীকে বটি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছিল বলে রিমান্ড শেষে ঘটনার ২ বছর পর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন।