নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে কিশোরী আপন দুই বোনকে ধর্ষণের অভিযোগে আবু বক্কর (৪৮)কে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (১২ অক্টোববর) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি কান্দাপাড়া এলাকায় একটি আবাসিক ভবনের খালি ফ্ল্যাট থেকে তাকে আটক করা হয়। আবু বক্কর ওই আবাসিক ভবনে কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করে। ভবনের মালিক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর পুলিশ আসার ঘটনা টের পেয়ে তাকে নিজ বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে লুকিয়ে রেখেছিল। ঘটনার পর বাড়ির মালিক জাহাঙ্গীর পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে। গত ৫ অক্টোবর ওই ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে কালক্ষেপণ করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীদের বাবা।
আরও পড়ুন
তিনি জানান, তিনি একটি ডেকোরেটরের দোকানে চাকরি করেন। তার এক মেয়ের বয়স ১২, অপরটির বয়স ১৪/১৫। মেয়ে ২ জনকে তিনি স্থানীয় একটি কারখানাতে কাজে লাগিয়েছিলেন। নিয়মিত কাজে না যাওয়ায় তিনি ছোট মেয়েকে মারধর করার কারণে তার ২ মেয়েই ভয়ে গত ৫ অক্টোবর আর কাজ থেকে সন্ধ্যায় বাসায় না ফিরে এলাকায় ঘুরছিল। জাহাঙ্গীরের বাড়ির সামনে ঘোরাফেরা করার সময় বাড়ির কেয়ারটেকার আবু বক্কর মেয়েদের ফুসলিয়ে ওই বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এদিকে অনেক রাতে বাড়িতে ফিরে এলে মেয়েরা পরের দিন বিষয়টি পরিবারকে খুলে বলে।
ওই রাতেই সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় গেলে সেখানকার পুলিশ সদস্যরা থানায় বড় অফিসার নেই বলে পরের দিন তাকে আসতে বলেন। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় রহিম মেম্বারের ছেলে মনির বিষয়টি নিয়ে বাড়িওয়ালা জাহাঙ্গীরকে অবগত করে মীমাংসার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে তালবাহানার এক পর্যায়ে সোমবার এলাকার যুবকরা বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশে খবর দেয় এবং আবু বক্করকে ধরতে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে বাড়িওয়ালা জাহাঙ্গীর তার কেয়ারটেকার আবু বক্করকে ৪ তলার একটি খালি ফ্ল্যাটে লুকিয়ে রাখে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পুলিশ তার সন্ধান পেয়ে ওই ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে আবু বক্করকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় সুযোগ বুঝে বাড়িওয়ালা জাহাঙ্গীর গা ঢাকা দেয়।
ঘটনাস্থলে যাওয়া সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক আলমগীর হোসেম জানান, গত ৫ অক্টোবর মৌচাকের একটি কারখানা থেকে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে আবু বকর ওই কিশোরী দুই বোনকে রাস্তা থেকে ফুসলিয়ে নাতনি ডেকে তার বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি সোমবার রাতে জানাজানি হলে এলাকাবাসী থানায় ফোন করে পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বাড়ির কেয়ারটেকার অভিযুক্ত আবু বকরকে ওই ভবনের ৬ তলার একটি কক্ষ থেকে আটক করে।
এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি কামরুল ফারুক জানান, কেয়ার টেকারকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।