নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার নিপীড়িত জনগণের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করে উপজেলার মুসাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেনকে ‘রাজাকার পুত্র’ আখ্যায়িত করা হয়েছে। এছাড়াও চেয়ারম্যান মাকসুদ ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে মাকসুদ অসহায় মানুষদের অর্থ ও ভূমি আত্মসাতের অভিযোগ এনে প্রশাসনিক তদন্তসহ সুষ্ঠু বিচার দাবী করেছে ভুক্তভোগীরা। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান মাকসুদ ও তার পরিবারের সকল অপকর্ম লিখিত আকারে প্রকাশ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
শনিবার (৩ অক্টোবর) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবনে একটি রেস্তোরায় এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহানগর আওয়ামীলীগের নেতা ও জেলা আওয়ামী যুব আইনজীবী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মামুন সিরাজুল মজিদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আব্দুল কাদির, বন্দর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি বিল্লাল হোসেন, জেলা পরিষদের সদস্য মো: আলাউদ্দিন, ২৭নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, নবীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বুলবুল আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অ্যাডভোকেট মামুন সিরাজুল মজিদ বলেন, চেয়ারম্যান মাকসুদের বিরুদ্ধে ভূমিদস্যুতা ও অর্থ আত্মসাতের বহুবিধ অভিযোগ রয়েছে। ২০১০ সালের ৩০ জুন থেকে অদ্যাবধি আলাউদ্দিনের নামে বাংলাদেশ রেলওয়ের কমার্শিয়াল লীজকৃত প্রায় ১৪২৫০ বর্গ ফুট এবং সরকারি রেলওয়ের ৬৯,৫০০ বর্গ ফুট জায়গা (যা গোকুলদাসেরবাগ চৌড়াস্তার মোড়ে অবস্থিত) জবরদখল করে এলাকার দোকান দেওয়ার নামে শতাধিক লোকের কাছ থেকে জনপ্রতি ২-৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও তাদের কোন দোকান বুঝিয়ে দেয়নি। চেয়ারম্যান মাকসুদ ও তার অনুগামীরা প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। কেউ টাকা চাইতে গেলে তাদেরকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকী দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া জনগণের থেকে আত্মসাতের অর্থ দিয়ে চেয়ারম্যান মাকসুদ জাঙ্গাল এলাকায় টুএসবি ও শাসনেরবাগ এলাকায় এফএনএফ নামের দু’টি পরিবেশ দূষণকারী ইটভাটা তৈরী করেছে। যার ফলে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এছাড়া বারপাড়া এলাকায় নিয়াজুল হক রানাগং এর জমি থেকে অবৈধভাবে ইটভাটার জন্য মাটি কেটে নিয়ে গেছে চেয়ারম্যান মাকসুদ গং। তাছাড়া মাকসুদ সোনালী পেপার মিল্স কর্তৃপক্ষের লঙ্গলবন্দ মৌজার প্রায় ৬ বিঘা জমি ও ৬ বিঘা পুকুর দখল করে রেখেছে বলেও অভিযোগ করা হয়। চেয়ারম্যান মাকসুদ চাপাতলীস্থ নামিরা মসজিদের নামে জোরপূর্বক লালখারবাগ নিবাসী ছিটু মুন্সির ছেলের কাছ থেকে ৪ শতাংশ জায়গা জোরপূর্বক ক্রয় করিয়া ১৬ শতাংশ জায়গা দখল করেন নেয়। যার মালিকরা দীর্ঘসময় ধরেও কোন প্রতিকার পায়নি।
তিনি আরও বলেন, চেয়ারম্যান মাকসুদ ও তার দোসররা অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে যা একাধিক জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ কাজে চেয়ারম্যান মাকসুদ, কামরুজ্জামান বাবুল, জামান, জামাল, আলতাফ হোসেন, ফিরোজ, তাওলাদ হোসেন জড়িত। বর্তমানে চেয়ারম্যান মাকসুদ ও তার সহযোগী কাউন্সিলর কামরুজ্জামান বাবুল নিজেদের অপকর্মকে চাপা দেওয়ার জন্য মসজিদ ও স্কুল কমিটিতে নিজেদের নাম লেখানোর চেষ্টা করছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলন থেকে দাবি জানানো হয়, রাজাকার পুত্র, খুনি, ভূমিদস্যু, অর্থ আত্মসাতকারী চেয়ারম্যান মাকসুদ এবং বাবুল গংদের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় এনে সুবিচার করা হোক।