নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় এক নারী শিল্পোৎদ্যোক্তার বিরুদ্ধে হয়রানীর অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী পরিবার সংবাদ সম্মেলন করেছে। শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে ফতুল্লার ভূঁইগড় পূর্বপাড়া এলাকার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে রকসি ফোম কারখানার মালিক রোকসানা রহমান রকসির বিরুদ্ধে হয়রানীর অভিযোগ করেন লাভলী আক্তার নামে অপর এক নারীর পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে লাভলীর পক্ষে তার বড় বোন বাবলী আক্তার, মা জোসনা বেগম, ভাবী সোনিয়া আক্তার এবং চাচা আবদুর রশিদ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ফতুল্লার ভূঁইগড় পূর্বপাড়া এলাকায় অবস্থিত রকসি ফোম কারাখানার মালিক রোকসানা রহমান রকসি একই এলাকার শাহানা মান্নান বুলবুলের নামে এক নারীর কাছ থেকে ৭ শতাংশ জমি ক্রয়ের জন্য বায়না করেন। নির্ধারিত সময়ে জমির দাম পরিশোধ ও রেজিস্ট্রি করে না নেওয়ায় জমির মালিক জমিটি লাভলী আক্তারের কাছে বিক্রয় করেন।
এদিকে গত ১৩ অক্টোবর রকসির মালিকানাধীন ফোম কারখানায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে রকসি ওই ঘটনায় জমিটির মালিক শাহানা মান্নান বুলবুল, ক্রেতা লাভলী আক্তার, মধ্যস্থতাকারী সাব্বির আহমেদ জুলহাস, মেহেদী হাসান শিপলু, রিপন মিয়া, লিটন মিয়া, আবদুল খালেক, আল আমিন ও খায়রুল আলমকে জড়িয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়ের করেই ক্ষ্যান্ত হননি রকসি, জমির ক্রেতা লাভলীর বাড়িতে লোক পাঠিয়ে হুমকি ধমকি এবং জমির দলিল দাবি করছেন। ফলে লাভলীর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে সংবাত সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, গত বুধবার রাতে রকসি গোপনে তার কারখানা থেকে ট্রাক ভর্তি করে মূল্যবান মেশিনপত্র সরিয়ে আবারো একটি মামলা করার পাঁয়তারা করেছিল। কিন্তু এলাকাবাসী তাদের ট্রাক আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে বলে যায় কারখানা থেকে কোন মালামাল বের করতে হলে দিনের বেলায় নিতে হবে। রাতে মালামাল বের করা যাবে না।
জমির মালিক শাহানা মান্নান বুলবুল বলেন, জরুরী ভাবে টাকা প্রয়োজন হওয়ায় জমি বিক্রি করেছি। কিন্তু রকসি আমার জমি বায়না করে সময় মতো টাকা পরিশোধ করেনি। বায়নার সময় অতিক্রমের পর ফোন দিলে ধরেনি। তার বাসায় গেলে দেখা দেয়নি। দরজার সামনে থেকে আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছে। সে বায়না করেই আমার সম্পদ আত্মসাতের চেষ্টা করেছিল। তাই স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় লাভলী আক্তারের কাছে জমি বিক্রি করে তাকে দখল বুঝিয়ে দিয়েছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে রোকসানা রহমান রকসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জমির মালিক আমার কাছ থেকে বায়না নিয়ে রহস্যজনক কারণে আরেক জনের কাছে জমি বিক্রি করে দিয়েছে। এতে আমি প্রতিবাদ করায় আমার কারখানায় আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে কারখানার দুই কোটি টাকার মালামাল ও মেশিনপত্র পুড়ে যায়। ওই ঘটনায় আমি মামলা করেছি কিন্তু পুলিশ এখনো কোন আসামীকে গ্রেফতার করেনি।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, রকসি ফোম কারখানায় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে। তদন্তে কারও বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত হলে অবশ্যই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।