গত দুইদিনের হালকা ও ভারী বর্ষণে নগরীর জীবন যাত্রায় বিপর্যয় নেমে এসেছে। বৃষ্টির পানিতে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে থেমে থেমে শুরু হয় বৃস্টিপাত। শুক্রবার সারাদিন সুর্যের দেখা মেলেনি নারায়ণগঞ্জের আকাশে। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও যানবাহনের সংখ্যা ছিল একেবারে কম। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া নগরবাসীও বাড়ির বাইরে তেমন একটাা বের হননি। সারাদিন শহর ছিল অনেকটাই ফাঁকা। এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশী বেকায়দায় পড়ে নিন্ম আয়ের মানুষেরা। অটো বা রিকশা চালিয়ে যাদের জীবিকা নির্বাহ হয়। রাস্তায় যাত্রী না থাকায় উপার্জন হয়নি তেমন একটা। চাষাড়া খাজা মার্কেটের সামনে হাত-পা গুটিয়ে রিকশার ভেতর বসে থাকা কাইয়ুম মিয়া (৫০) বলেন, সকাল থেকেই তো বৃস্টি। নামাজের পর বের হয়েছিল। সন্ধ্যা হয়ে গেল। মাত্র ৪০ টাকা ভাড়া পেয়েছি। আর পাবো কি না জানি না।
এদিকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনের অপেক্ষায় থাকে ফুটপাতের হকাররা। কিন্তু বৃষ্টির কারণে তারা ভাসমান দোকান নিয়ে বসতে পারেনি।
ওদিকে হিন্দু ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে শহরের বিভিন্ন পূজা মন্ডপগুলো মানুষের দ্বারা পূর্ণ থাকার কথা থাকলেও টানা বৃষ্টি থাকায় তারাও ছিলেন ঘরবন্দি। এ অবস্থায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গা পুজো’র আয়োজনে। মন্ডপগুলোতে ধর্মভক্তদের উৎসবে পড়েছে ভাটা। শহরের কালীর বাজার এলাকার অশোক কুমার বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য। একেতো করোনার মহামারিতে এবারের কোন উৎসবই পালন করা সম্ভব হয়নি। তাই বিধি নিষেধ যতটা সম্ভব মেনে এ পুজোয় আনন্দ করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু সেই ইচ্ছাটা আর সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
অপরদিকে বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে আকষ্মিক দুর্ভোগে পড়েছে পানিবন্দি মানুষ।
জামতলা ধোপা পট্টির বাসিন্দা সাংবাদিক আবু সাউদ মাসুদ জানান, জুমআর নামাজের পর দেখে আসলাম বৃস্টির পানি ঘরের সামনে এসে গেছে। সন্ধ্যার পর খবর পেলাম ঘরের ভেতর পানি ঢুকে পড়েছে। মানে জলাব্ধতায় এখন আমরা পানিবন্দি।
জানা যায়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপের কারণে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সারাদেশে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হলেও শুক্রবার সারাদিনই ছিল টানা বৃষ্টিপাত। নিম্নচাপের কারণে চাঁদপুর নৌ-বন্দরকে স্থানীয়ভাবে ২ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। যার কারণে চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জের মধ্যে চলাচলকারী ছোট লঞ্চগুলো চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) সকাল ৭টা থেকে এ রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ) কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি বৃষ্টির কারণে বাসসহ কোনো ধরনের গণপরিবহনেই যাত্রীদের চাপ তেমন একটা লক্ষ্য করা যায়নি।