নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শিমরাইলে মুনস্টার মার্কেটিং প্রাাইভেট লিমিটেড নামের একটি কারাখানায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ৯০ কোটি টাকা মূল্যের বিপুল পরিমান নকল প্রসাধনী ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী জব্দ করেছে র্যাবের ভ্রম্যামান আদালত। বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে র্যাব-৩’র গোয়েন্দা বিভাগ ও বিএসটিআইয়ের সহযোগিতায় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট পলাশ কুমার বসুর নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়। এরআগে গত বছর রাতের বেলা নারায়ণগঞ্জে থাকা অবস্থায় আলোচিত এসপি হারুন এই কারখানায় অভিযান চালিয়েছিল। এরপর এই প্রতিষ্ঠানের মালিক গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে তার কারখানার পক্ষে বৈধতা তুলে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার রাতের অভিযানে কারখানার ভেতরে মিথানল ও স্পিরিটসহ মেয়াদোত্তীর্ণ ক্যামিকেল মিশিয়ে প্রস্তুকৃত বিপুল পরিমান ফগ, সিগনেচার, হোভোগল্ড, কার্টন লিমা, বøুলেডি, জ্যাসমিন, গেমবটি, মিলিনিয়াম, কোবরা, ম্যাক্স, রয়েলমেরগিসহ বিশ্বের বহুল সমাদৃত নামি দামি ব্র্যান্ডের নকল প্রসাধনী সামগ্রী এবং সনি ব্রাবারিয়া, প্যানাসনিক ও এলজি ব্র্যান্ডের টেলিভিশন জব্দ করা হয়। যার মূল্য প্রায় ৯০ কোটি টাকা। একই সামগ্রী দিয়ে এসব নামিদামি ইলেকট্রনিক্স পণ্য তৈরি করে দেশের বাজারে বিক্রি করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। এসব নকল প্রসাধনী উৎপাদন ও বিপননের সঙ্গে জড়িত কারখানার মালিক বেলায়েত হোসেনসহ কারাখানার মোট ৭ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে আটক করেছে র্যাব।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট পলাশ কুমার বসু জানান, মুনস্টার মার্কেটি প্রাইভেট লিমিটেড কারাখানার মালিক বেলায়েত হোসেন দীর্ঘদিন ধরে এই কারখানার ভেতরে বিশ্বের বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের প্রসাধনী সামগ্রী ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী উৎপাদন করে দেশের বাজারে বিক্রি করে আসছেন। যা মানুষের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। ২০১৭ সালে মেয়াদোত্তীর্ণ ক্যামিকেল দিয়ে একটি মাত্র মেশিন দিয়ে কোবরা, ফগ, বøুলেডি, সিগনেচার, হোভোগল্ডসহ বিভিন্ন দেশের নামিদামি কোম্পানীর লেভেল সাঁটিয়ে ছোট ছোট কন্টেইনার রিফিল করে বাজারজাত করে আসছে। দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চকবাজারসহ দেশের বিভিন্ন ছোট বড় শপিংমলের প্রসাধনীর দোকানে এসব নকলপন্য সরবরাহ করে মানুুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে। এসব নকল প্রসাধনী ব্যবহার করে মানুষ স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়ছেন। মিথানল ব্যবহার করতে হলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের লাইসেন্স এবং পরিবেশ লাইসেন্স বাধ্যতামূলক হলেও এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ভ্রম্যামান আদালতকে কোন কিছুই দেখাতে পারেনি।
র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরও জানান, কারখানার ভেতরে ও গোডাউনে প্রায় ৯০ কোটি টাকার বেশী নকল প্রসাধনী ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে। এসব নকলপণ্য যাতে দেশের বাজারে সরবরাহ করতে না পারে এজন্য কারখানাটি সিলিগালা করে দেয়া হয়েছে। এবং কারখানার মালিকসহ আটক ৭ জনের বিরুদ্ধে ৭৪ বিশেষ ক্ষমতা আইনে ও প্রতারনার অভিযোগ নিয়মিত মামলা দায়ের করা হবে।
তবে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের দাবি তার সকল প্রকার কাগজপত্র রয়েছে। কিন্তু ভ্রম্যামান আদালতের লোকজন কিছুই দেখছে না।