জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ দু:স্থ ও কর্মহীনদের মাঝে ৪২টি সেলাই মেশিন ও ভ্যানগাড়ি বিতরণ করেছেন। সোমবার সকালে জেলা পরিষদ কার্যালয়ে নারায়ণগঞ্জের বন্দরের ৫টি ইউনিয়নের দু:স্থ ১৮ নারী ও কর্মহীন ২৪ জন ব্যক্তির মাঝে এগুলো বিতরণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন, সহকারী প্রকৌশলী অলি উল্লাহ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা কে এম রাশেদুজ্জামান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার পালিত, জেলা পরিষদের সদস্য মাহমুদা মালা, মজিবুর রহমান, মোস্তফা হোসেন চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলমসহ জেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারী বৃন্দ।
সেলাই মেশিন ও ভ্যানগাড়ি বিতরণ শেষে বঙ্গবন্ধু ও তার সাথে নিহত পরিবারের সকল সদস্যদের রূহের মাগফেরাত এবং প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া করানো হয়।
এসময় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন বলেন, কর্মহীন, যারা দু:স্থ, যারা কাজ করে খেতে পারে না তাদের বেকারত্ব গুছানোর জন্য আমাদের এই প্রয়াস। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ আছে যারা কর্মহীন আছে তাদেরকে কর্মের ব্যবস্থা করে দেয়া, যারা দু:স্থ আছে তাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করা।
তিনি বলেন, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বলেছেন, মানুষের কল্যানের জন্যই রাজনীতি। বঙ্গবন্ধুর সেই প্রচেষ্টাকে বাস্তবায়ন করাই আমাদের এই প্রয়াস। বঙ্গবন্ধু এই দেশের দুখি মানুষের মুক্তির সনদ, স্বাধীনতা আন্দোলনের মহান নেতা, বার বার বাঙ্গালী জাতির স্বার্থে তিনি কারানির্যাতন ভোগ করেছেন। ফাঁসির মঞ্চে গিয়েও বাঙ্গালীর স্বার্থে কথা বলেছেন। তারপরই তিনি বাঙ্গালী জাতির একক নেতা হিসেবে সৃষ্টি হয়েছেন।
আনোয়ার হোসেন বলেন, একসময় মাওলানা ভাসানী বলেছিলেন, ব্যালট বাক্সে লাথি মারো বাংলাদেশ স্বাধীন করো’। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ব্যালট বাক্সে লাথি মারলে বাংলাদেশ স্বাধীন করা যাবে না। কারণ বাংলাদেশের নেতাটা কে তা আগে সৃস্টি করতে হবে। জনগণ সৃষ্টি করুক বাঙ্গালী জাতির পিতা কে? এবং সেটা ১৯৭০ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে বাঙ্গালী প্রমান করেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবই এই দেশের বাঙ্গালী জাতির পিতা। একক নেতা। এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীনতা আন্দোলন হয়েছিল। তার অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী সরকার গঠন হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। আমরা ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত ও দুই লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। কিন্তু স্বাধীনতার তিন বছর না যেতেই যারা স্বাধীনতাকে চায় নাই, মুক্তিযুদ্ধ চায় নাই, তারা বাংলাদেশের এই স্বাধীনতাকে বিপন্ন করার জন্যই স্বাধীনতার অগ্রযাত্রাকে রোহিত করার জন্য আন্তর্জাতিক ও দেশীয় চক্রান্তের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারের নির্মম নৃসংশভাবে হত্যা করেছে।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে এই বাংলাদেশ নিয়ে তিনি যেই স্বপ্ন দেখছিলেন সেই স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিয়েছে ঘাতক চক্র। যেই শাহ আজিজ পাকিস্তানের পক্ষে ছিল বাংলাদেশ চায় নাই। সেই শাহ আজিজকে রাষ্ট্র প্রধান করে স্বাধীনতার আদর্শকে ভুলন্ঠিত করেছে। যেই গোলাম আযম স্বাধীনতার রিবোধীতা করেছিল সেই গোলাম আযমকে জিয়াউর রহমান পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে এনে নাগরিকত্ব দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী যারা তাদেরকে জিয়াউর রহমান পূর্নবাসিত করেছে। রাষ্টীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ফ্রিডম পার্টি গঠন করে প্রহসনের নির্বাচন করে সংসদে তাদের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ করে দিয়েছে। এই ছিল জিয়াউর রহমানের স্বপ্ন। শুধু এটাই নয়, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার বিচার করা যাবে না, এই মর্মে সংসদে আইন পাশ করিয়েছেন জিয়াউর রহমান। তবে সত্য কোনদিন চাপা থাকে না। সত্য প্রস্ফুটিত হবেই।
আনোয়ার হোসেন বলেন, আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি স্বাধীনতা বিরোধী যারা ছিল তাদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী তাদেরকে বিচারের মাধ্যমে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো হয়েছে। যারা বিদেশে পালিয়ে আছে তাদের আনার চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছিল সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা যারা রাজনীতি করি আওয়ামীলীগের একনিষ্ঠ কর্মী, সৎ, নিষ্ঠাবান যারা তাদেরকে নিয়ে দল গঠন করে মানুষের কল্যানে যাতে আত্ম নিয়োগ করতে পারি, এটাই হোক আজকে ১৫ আগস্টের অঙ্গীকার।