ফতুল্লায় নিজ বাড়িতে প্রবাসীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় তার স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসবাদ চলছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে ফতুল্লার মাসদাইরে।
জানা যায়, নিজ বাড়ীর বাথরুমে পড়েছিলো প্রবাসী জামালের রক্তাক্ত মৃতদেহ। পরিবারের সদস্যরা গোপনে দাফন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলো। বুধবার (২৬ আগস্ট) সকালে স্থানীয় এলাকাবাসীর নিকট সংবাদ পেয়ে দাফনের পূর্বেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত দেহ উদ্বার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে এবং জামালের স্ত্রী শারমীন আক্তারকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় । নিহত জামাল ফতুল্লা থানার দাপাইদ্রাকপুর এলাকার রেইনবো মোড় এলাকার মৃত মোঃআলীর পুত্র। সে দীর্ঘদিন সৌদি আরব ছিলো। দেড় বৎসর পূর্বে সে দেশে ফিরে এসে আর সৌদিআরব ফিরে যায়নি।
ঘটনার বিবরনীতে মৃত জামাল মিয়ার মেয়ে সামিয়া আক্তার (২০) জানান, মঙ্গলবার দুপুরে সে মাসদাইরস্থ নিজ শ্বশুরালয় থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসে। তার বাবা রাত এগারোটার দিকে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরে। রাত আড়াইটার দিকে তার ঘুম ভেঙ্গে গেলে সে ডাইনিং রুমের আলো জ্বালানো দেখতে পেয়ে তা নিভাতে এসে দেখতে পায় যে তার বাবার মৃত দেহ বাথরুমের ভিতরে পরে রয়েছে। তখন সে তার মাসহ ছোট ভাইকে ডেকে তোলে। পরবর্তীতে তাদের বাড়ীর ভাড়াটিয়াদের ডেকে তোলা হয়।সবাই এসে মৃত দেহ বাথরুম থেকে বের করে নিয়ে আসে।
হাসপাতালে কেনো নিয়ে যাওয়া হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তার স্বামীকে এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসার জন্য বলা হলে তা না পাওয়ায় আর নিয়ে যাওয়া হয়নি। তাছাড়া পরিবারের সকলে এবং পাশ্ববর্তী ভাড়াটিয়ারাও তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করায় তারা আর হাসপাতালে নিয়ে যায়নি। তাই নিকটাত্মীয় স্বজনদের শলা পরামর্শে তাদের উপস্থিতিতে দাফনের ব্যবস্থা করেছিলো।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন জানায়, এ ঘটনায় জামালের স্ত্রী শারমীন আক্তার (৪০) কে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে থানা পুলিশের অপর একটি সূত্র জানায়, পারিবারিক দ্বন্ধের জের ধরে জামালকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে গোপনে দাফন কার্য সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করেছিলো ঘাতক স্ত্রী।
সূ্ত্রটি আরো জানায় যে, প্রথমে ঘুমন্ত জামালকে ওড়না দিয়ে হাত- পা- মুখ বেধে হাতুড়ি দিয়ে মাথা থেতলে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে স্ত্রী শারমীন আক্তার। পরবর্তীতে জামালের মৃত দেহ টেনে বাথরুমে নিয়ে যাওয়া হয় এবং নিজে রুমে গিয়ে শুয়ে পরে।পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে বলে সূত্রটি জানায়।