পুলিশের খাতায় মৃতের তালিকায় থাকা স্কুল ছাত্রী জিসা মনি জীবিত ফিরে আসার পর আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। সোমবার (২৪ আগস্ট) বিকালে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফতাবুজ্জামানের আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। জিসা মনি আদালতের তার নিখোঁজ থাকার বিষয়, প্রেম, বিয়ে এবং ফিরে আসার পুরো ঘটনা বর্ণনা করে। পরে বয়স বিবেচনায় আদালত তাকে পরিবারের জিম্মায় দেয়ার আদেশ দেন।
এদিকে পুলিশ জিসা মনি স্বামী ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠিয়েছে। আগামী মঙ্গলবার তার রিমান্ড শুনানি হবে।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টরিয়া) স্কুল ছাত্রী জিসা মনির মেডিকেল টেস্ট করা হয়েছে। এরপর বিকেলে আদালতে ২২ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তার পরিবারের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জিসা মনির স্বামী ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে জিসা মনির বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসছি। মেয়েকে যেহেতু পেয়ে গেছি তাই আমার আর কোন অভিযোগ নাই।
নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ পাক্কারোড এলাকার গার্মেন্ট শ্রমিক জাহাঙ্গীরের ছোট মেয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী জিসা মনি গত ৪ জুলাই থেকে নিখোঁজ হয়। এক মাস পর ৬ আগস্ট জিসা মনির বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। এই মামলায় ৭ আগস্ট পুলিশ গ্রেপ্তার করে জিসা মনির কথিত প্রেমিক আব্দুল্লাহ, নৌকার মাঝি খলিল ও অটো চালক রকিবকে। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর মডেল থানার এস আই শামীম আল মামুন তিনজনকে রিমান্ডে নেয়। এবং আসামীদের স্বজনদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় রিমান্ডে মারবে না এই শর্তে। কিন্তু টাকা নিয়ে এস আই শামীম অমানসিক নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে জিসা মনিকে ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিতে বাধ্য করে। কিন্তু ২৩ আগস্ট সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে জিসা মনি জীবিত ফিরে আসে। চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় সর্বত্র।